জমি অধিগ্রহণ জটিলতা
আটকে আছে ঢাকা-রংপুর চারলেন মহাসড়কের অবশিষ্ট কাজ

ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প-৮-এর আওতায় ২৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার অংশের কাজ ৮৫ ভাগ সম্পন্ন হলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এখনও ১৫ শতাংশ কাজ আটকে আছে। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়িতে দেড় কিলোমিটার অংশে এখনও কাজ শুরু করতে পারেনি সাসেক-২ এর প্রকল্প-৮এর কর্মকর্তারা। ফলে সময়মতো কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে ।
টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুন মাসে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো ২০২২ সালের জুন মাসে। কিন্ত করোনা, বন্যা ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় গেল বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর'২৪ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঢাকা- রংপুর মহাসড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক-২)।
সাসেক -২ সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগা থেকে রংপুর নগরীর মর্ডাণ মোড় পর্যন্ত ২৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সড়কের ৮৫ ভাগ নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ী বন্দরে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় দেড় কিলোমিটার অংশে এখনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। সেখানকার প্রায় ২২ একর জমি এখনও অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়নি।
এর কারণ হিসাবে জানা গেছে, সেখানকার ভূমি মালিকদের অসহযোগিতার কারণে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে সাসেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অচিরেই এই জটিলতা কাটিয়ে ওই এলাকায় কাজ শুরু করা হবে।
ঢাকা -রংপুর মহাসড়কের জায়গিরহাট ও মিঠাপুকুরে ওভারপাস নির্মাণ করায় সেখানকার যানজট নেই। শঠিবাড়ি ও বড়দরগায় ওভারপাসের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। পায়রাবন্দের ইসলামপুর এলাকায় স্বয়ংক্রিয় টোল প্লাজার নির্মাণ কাজ চলছে। সেখানে অন্যান্ন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
সাসেক -২ কমকর্তা জানিয়েছে, পীরগঞ্জের বড়দরগা থেকে রংপুর মডার্ন মোড় পর্যন্ত ২৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সড়কে ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পীরগঞ্জের বড়দরগা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত মহাসড়ক নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ১৪০ একর। ৪ হাজার ৫৯৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, কৃষক, জমির মালিকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে ৮৫৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মূল চার লেনের প্রশস্ততা রয়েছে ১৮ মিটারেরও বেশি। ধীর গতির যানবাহন চলাচলের জন্য যে দুই লেনের প্রশস্ততা হচ্ছে ১১ মিটার। এই সড়কে বড়দরগায় ৫৪ মিটার, শঠিবাড়িতে ৫৪ মিটার, মিঠাপুরে ৬৯ মিটার ও জায়গীরহাটে ৩০ মিটার আন্ডারপাস রয়েছে। এছাড়া ২৫ দশমিক ৫ মিটার মডার্ন ব্রিজ ও ৬৭ দশমিক ১৫ মিটার দমদমা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। বৈরাগীগঞ্জ ও পায়রাবন্দে দুটি ইউটার্ন রয়েছে। মিঠাপুরের গড়েরমাথায় সংযোগ সড়কে ইন্টারসেকশন রয়েছে।
সাসেক-২ প্রকল্প-৮ এর উপ-প্রকল্প ম্যানেজার নাশিদ হাসান সিরাজী জানান, হাটিকুমুল থেকে রংপুরের চারলেন মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হলে উরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এর পাশাপাশি গড়ে উঠবে শিল্প কলকারখানা। প্রসারিত হবে ব্যবসা বাণিজ্য। এসব কর্মকাণ্ডে সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থান।
প্রসঙ্গত, এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চারলেন সড়কের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুনে । ২০২২ সালের জুনের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। করোনা, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ ও বন্যার কারণে প্রকল্পের কাজ মন্থর হয়ে পড়ে। এতে করে এক বছর কাজের মন্থর গতির কারণে পিছিয়ে যায়। এজন্য ২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।(ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/এআর)

মন্তব্য করুন