ভিডিও ফুটেজ দেখে সরকারি ৪ হাসপাতাল থেকে ৪২ দালাল ধরল র্যাব
রাজধানীর শ্যামলী সংলগ্ন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দালালবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে এলিট ফোর্স র্যাব। অভিযানে চারটি সরকারি হাসপাতাল থেকে ৪২ জন দালালকে আটক করা হয়েছে।
র্যাব বলছে, অভিযুক্তরা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বাইরের ক্লিনিকে নিয়ে যেতেন। এসব ক্লিনিকে চিকিৎসার নামে চলত অপচিকিৎসা। এতে অনেক রোগীর মৃত্যুসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা তৈরি হতো। দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে তাদেরকে শনাক্ত করা হয়। এরপর বুধবার সকাল থেকে তাদেরকে আটক করতে চলে অভিযান। পরে তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
র্যাব-২ এর উপঅধিনায়ক মেজর নাজমুল্লাহেল ওয়াদুদ বলেন, অভিযানে প্রমাণ স্বরূপ আমরা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এছাড়া দেখেছি বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ প্রতিনিধি এসব সরকারি হাসপাতালে দেখার চেষ্টা করেন তাদের ওষুধ লেখা হয়েছে কি না। আবার কিছু দালাল আছে যারা হাসপাতাল থেকে রোগীদের যেসব পরীক্ষা-নীরিক্ষা দেওয়া হয়, সেগুলো এখানে না করিয়ে বাইরের বেসরকারি হাসপাতালে করলে কম টাকায় দ্রুত করা যাবে এমন প্রলোভন দেখান। এরপর বাইরে নিয়ে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করে। অনেক ক্ষেত্রে বাইরের এসব হাসপাতালে মানসম্মত চিকিৎসক বা সেবা দেওয়া হয় না। এতে রোগীর মৃত্যুসহ বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হয়। আমরা চাই না বিভিন্ন হাসপাতালে এসব অনিয়ম থাকুক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাশাপাশি র্যাব কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, অবৈধ ক্লিনিক তাদের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করুক। আর সরকারি হাসপাতালে যেন বেশি সংখ্যক রোগী আসুক এবং সরকারিভাবে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হোক।
অভিযানে হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে ১২ জন দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল দেওয়া হয়েছে। আর জরিমানা করা হয়েছে নয়জনকে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ১৮ জন দালালকে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনকে সাজা এবং বাকিদের ম্যাজিস্ট্রেট সাজা দিয়েছেন। এছাড়া শিশু হাসপাতাল ও পঙ্গু হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনার অভিযোগে নয়জনকে আটক করা হয়। সব মিলিয়ে দালালি ও দালাল সংশ্লিষ্ট ৪২ জনকে আটক করা হয়। মেজর ওয়াদুদ বলেন, আমরা তাদেরকে আদালতে ও কারাগারে প্রেরণ করব।
এদিকে, রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানের প্রথম দিনে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মোট ছয়টি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়রি/এসএস/ইএস)
মন্তব্য করুন