অন্যের জমির সীমানা প্রাচীর ভাঙলেন মানবাধিকার কর্মী!

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ মার্চ ২০২৪, ১১:০৭
অ- অ+

সাভারের আশুলিয়ার অসহায় চা দোকানি নারীসহ একাধিক মানুষের জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সোহাগ মন্ডল নামে এক কথিত মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে। নামে মানবাধিকার কর্মী হলেও মানুষের অধিকার হরণের একাধিক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানা পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা।

অভিযুক্ত মানবাধিকার কর্মী মো. ইমরান হোসেন সোহাগ ওরফে সোহাগ মন্ডল (৩৮) আশুলিয়ার দুর্গাপুর এলাকার আলমাস আলী মন্ডলের ছেলে। তিনি আশুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। সামাজিক, পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা নামে একটি সংগঠনের আশুলিয়া থানা কমিটির সহ-সভাপতি তিনি। এছাড়া তার অন্য সহযোগীরা হলেন, একই এলাকার ফরহাদ মন্ডল, নূর ইসলাম বাদল মন্ডল ও সোবহান মন্ডলসহ অজ্ঞাত কয়েকজন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১ সপ্তাহে আশুলিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ভাংচুর, জোর খাটিয়ে জমির সীমানা প্রাচীর ভাংচুর, ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

চায়ের দোকান চালিয়ে আশুলিয়ার দুর্গাপুর এলাকায় মাত্র ২ শতাংশ জমি কিনেছিলেন লাইজু আক্তার। জমি দখলের পাঁয়তারা করতেই গত ২৯ ফেব্রুয়ারি লাইজু আক্তারের জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেন সোহাগ ও তার সহযোগীরা। পার্শ্ববর্তী জমির মালিক খাদিজা রহমান। তার জমির পরিমাণ ৪ শতাংশ, তাঁর জমিতেও গত ১ মার্চ একইভাবে হানা দিয়েছে সোহাগ। এমনকি এই দুই ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ানোর কারণে স্থানীয় রুবেল মন্ডল নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলতাফ নগর স্কুলের সাইনবোর্ড ভাংচুর করে উঠিয়ে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে সাইনবোর্ড উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়কার সিসি ফুটেজে সোহাগ মন্ডল, বাদল মন্ডল ও ফরহাদ মন্ডল সহ বেশ কয়েক ব্যক্তিকে স্পষ্টভাবেই দেখা যায়। তখন তাদের কাছে দা-লাঠি সহ দেশীয় অস্ত্রও দেখা যায়।

ভুক্তভোগী লাইজু আক্তার বলেন, আমরা খুব গরিব মানুষ। ৭ বছর আগে অনেক কষ্টে মাত্র দুই শতাংশ জমি কিনেছি। এখন আমাদের ভয়ভীতি দেখায়, মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তারা। আমাদের সামনে দিয়ে দা নিয়ে যাওয়া আসা করে। আমার জমির বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে দিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।

এদিকে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ মন্ডলের বেপরোয়া চলাফেরার কারণে প্রায়ই খবরের কাগজে নাম উঠেছে। গত বছর ঝুট ব্যবসার দখল নিতে গিয়ে ফ্যাশন গ্লোভ গ্রুপ লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. মঈনুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সোহাগ মন্ডল। এছাড়া ফিউচার ক্লোথিং নামে পোশাক কারখানার এক নারী পোশাক শ্রমিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে।

বারবার মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তিনি কিভাবে মানবাধিকার সংস্থার সহ-সভাপতি হয়, জানতে কথা হয় সামাজিক, পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার আশুলিয়া থানা কমিটির সভাপতি হাজী মোশাররফ হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, আমি তো এসব বিষয়ে কিছু জানি না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসব ব্যাপারে অভিযুক্ত সোহাগ মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৬মার্চ/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এবার বাংলাদেশের চার টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ করল ভারত
দায়িত্ব নিয়েই হেভিওয়েট আ.লীগ নেত্রী গ্রেপ্তার, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির প্রশংসায় জুলকারনাইন সায়ের
ফের একাধিক প্রদেশে ড্রোন হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, বিস্ফোরণ-গোলাগুলি
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের বাড়িতে আ.লীগ নেতার হামলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে আতঙ্ক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা