মোহাম্মদপুর-ধানমন্ডিতে কিশোর গ্যাং
দিনে নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশায়, রাতে ভয়ঙ্কর তারা
রাজধানীর মোহাম্মাদপুর ও ধানমন্ডি এলাকায় পাঁচ 'কিশোর গ্যাং' গ্রুপের ২৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
দিনে নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশায় জড়িত থাকলেও রাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠত তারা। দেশীয় অস্ত্রের মুখে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে লুটে নিতো নগদ টাকা, মূল্যবান জিনিসপত্র।
রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আনোয়ার হোসেন খান।
তিনি জানান, মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘কিশোর গ্যাং’ গ্রুপের সদস্যরা চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছিলো। তাদের হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি ও মামলা হয়।
এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করতে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাত, মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করত। সম্প্রতি মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডির আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র্যাব। এতে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। ২৩ মার্চ রাতে একাধিক অভিযানে মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি এলাকা থেকে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে কিশোর গ্যাংয়ের ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-২-এর অধিনায়ক আরও জানান, গ্রেপ্তার সবাই কিশোর গ্যাং 'আক্তার গ্রুপ', 'মাসুম গ্যাং', 'পিনিক গ্রুপ', 'বাপ্পী গ্রুপ' ও 'লিমন গ্রুপ'এর সদস্য। অভিযানে তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র যেমন চাপাতি, ছুরি, চাকু, চাইনিজ কুড়াল, এন্টি কাটার উদ্ধার করা হয়েছে।
যেসব অপকর্মে গ্যাং সদস্যরা
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তারের পর অভিযুক্তরা জানিয়েছে, তারা মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, আদাবর, ঢাকা উদ্যান ও ধানামন্ডি এলাকায় চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম করত।
এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা একাকি পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, বেড়িবাঁধ, আদাবর, মোহাম্মদপুরসহ এর আশপাশের এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালাতো।
অভিযানে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা দিনের বেলায় গাড়ির চালক, হেলপার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রির পেশায় জড়িত। রাত হলেই ছিনতাই ও চাঁদাবাজিতে নেমে পড়ত। গ্রেপ্তার সবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাই ও মারামারি সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। কারাগার থেকে বেরিয়ে তারা একই পেশায় জড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে র্যাব-২-এর সহকারী পরিচালক শিহা করিম জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিভিন্ন হস্তান্তর এবং মামলা দেওয়া হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/এসএস/এআর)
মন্তব্য করুন