বিএসএমএমইউতে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে: ভিসি দীন মোহাম্মদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৩৯

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মাদ নূরুল হক।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লক এফ এর দ্বিতীয় তলায় বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন অ্যান্ড স্টেম সেল থেরাপি সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মাদ নূরুল হক বলেন, সিএমএইচ, ঢাকা মেডিকেল কলেজে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন সেবা চালু আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত সুযোগ সুবিধার মধ্যেও উন্নতমানের বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন সেবা দেওয়া হচ্ছে। মাত্র তিন লাখ টাকার মধ্যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপযুক্ত কাজ হবে। দেশের রোগীরা এখানে এসে যাতে বিশ্বের সর্ব উৎকৃষ্ট চিকিৎসাসেবা পায় তা নিশ্চিত করা হবে। বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন অ্যান্ড স্টেম সেল থেরাপি সেন্টারে প্রত্যেক মাসে যাতে কমপক্ষে ৫ জন রোগীকে এই সেবা দেয়া যায় তাও নিশ্চিত করা হবে।

হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাহ উদ্দিন শাহ বলেন, বর্তমান সময়ে হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল/বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন রক্ত রোগের আধুনিকতম চিকিৎসা সমূহের মধ্যে অন্যতম। সারা পৃথিবীতে লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, মায়েলোমাসহ রক্তের ক্যাল্লার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। লিউকেমিয়াসহ রক্তের ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ক্ষেত্রেও স্থায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল, বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন।

তিনি বলেন, উচ্চ মাত্রার কেমোথেরাপি, ক্যান্সারের ওষুধ প্রয়োগ এবং উৎপাদনক্ষম কোষগুলো থেকে পুনরায় স্বাভাবিক রক্তের কোষগুলো তৈরি হওয়ার মধ্যবর্তী সময়টুকুতে শরীরে রক্ত কোষের সংখ্যা অত্যন্ত কম থাকে এবং এ সময়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। রক্তকোষের সংখ্যা অত্যন্ত কম থাকার কারণে এ সময় দুর্বলতা, বিভিন্ন সংক্রামক রোগ, রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম হওয়ার কারণে এ সময়টুকু রোগীকে আলাদা কক্ষে অবস্থান করতে হয়। এ কক্ষে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। সংক্রামক রোগ এর সম্ভাবনা হ্রাস করার লক্ষ্যে এ কক্ষে বহিরাগতদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত রাখতে হয়।

মায়েলোমা, লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, থ্যালাসেমিয়া, এপ্লাস্টিক এ নিমিয়াসহ রক্তের ক্যান্সার ও রক্তরোগের এবং অন্যান্য ক্যান্সার, ইমিউন ডিফিসিয়েন্সি রোগীদের চিকিৎসায় সহজে এবং সুলভে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে এদেশের স্বাস্থ্যখাতে নবনির্মিত এ সেন্টার বড় ভূমিকা রাখবে এবং এর পাশাপাশিদেশের রক্তরোগ চিকিসকদের বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন বিষয়ের উচ্চতর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে বলে অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ আশা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় ট্রান্সপ্লান্টসেন্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই এই সেন্টারের রূপকল্প। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজী বিভাগকে বিশ্বমানের হেমাটোলজী চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত করতে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত করতে নবনির্মিত বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।

প্রেসব্রিফিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগে. জেনা. ডা. মো. রেজাউর রহমান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা মো. সালাহউদ্দীন শাহ, অধ্যাপক ডা. এবিএম ইউনুস, অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুজ্জামান খান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আমিন লুৎফুল কবির, সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা রহমান, সহকারী অধ্যাপক ডা. মুনিম আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক ডা. মুজাহিদা রহমান, সহকারী অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. গোলজার হোসেন, সহকারী অধ্যাপক ডা. জুলফিয়া জিনাত চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রায়িক রায়হান চৌধুরীসহ হেমাটোলজী বিভাগের চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, নার্স, টেকনোলজিস্ট ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস/০৩এপ্রিল/টিআই/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :