শত বছরের পুণ্যস্নান উৎসবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

মধুকৃষ্ণের ত্রয়োদশ তিথি উপলক্ষ্যে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তুলসীগঙ্গা নদীর উত্তরমুখী স্রোতে সনাতন ধর্মালম্বীদের পুণ্যস্নান উৎসব শুরু হয়েছে। উপজেলার পাথরঘাট এলাকায় শনিবার সকাল থেকে ‘বারুণী স্নান উৎসব’ নামে এই উৎসব শুরু হয়।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে এই উৎসবে যোগ দিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আসেন। নিজেকে পাপ মুক্ত করতে এবং স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের মঙ্গল কামনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখানে আসেন বলে জানা গেছে।
মেলায় আসা ভক্ত পূজারিরা বলছেন, শত বছর ধরে তুলসীগঙ্গা নদীর উত্তর স্রোতে মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথি উপলক্ষ্যে স্নানোৎসব পালন করে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এখানে স্নান করে দেহ ও মনকে পরিশুদ্ধ করতে অনেকে মাথার চুল বিসর্জন দেন, পূজা অর্চনা করেন। তারপর তারা স্নানমন্ত্র পাঠ করে হাতে বেল পাতা, ফুল, ধান, দূর্বাঘাস, হরীতকী, কাঁচা আম, ডাব, কলা ইত্যাদি অর্পণের মাধ্যমে স্নান সম্পন্ন করেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে, যে স্থানে নদীর প্রবাহ সোজা উত্তরমুখী সেই স্থানে স্নান করা পুণ্যের কাজ। তাদের ধর্মীয় বিধান মতে, জীবন মরণে স্নান হলো হিন্দুদের এক অখণ্ড মহামন্ত্র। স্নানের পবিত্র ধারায় দেহ ও মনকে ধন্য করা এক আত্মীক সাধনা।
সূর্য ওঠার আগেই পুণ্যার্থীরা পবিত্র হওয়ার জন্য মাথার চুল বিসর্জন ও পূজা অর্চনা করেন। এরপর তুলসীগঙ্গা নদীর উত্তরমুখী স্রোতে স্নান করেন। দেশের বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার পূজারি ও নর সুন্দররাও (নাপিত) এখানে আসেন।
শত বছরের এই উৎসব উপলক্ষে পাথরঘাটা মাজার প্রাঙ্গণে জমে উঠেছে দিনব্যাপী মেলা। মেলায় ঢাক-ঢোল, হাসুয়া বটি, বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র, ছোটদের খেলনা, কাঠের তৈরি গৃহস্থালি জিনিসপত্র, দই মিষ্টিসহ বাহারী জিনিসপত্র নিয়ে দোকানপাট বসেছে। এ মেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষও আসেন। তারা নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করে থাকেন মেলা থেকে। তবে, এ বছর রমজানে মাসে মেলা হওয়ায় গত বছরের তুলনায় বেচা বিক্রি কিছুটা কম বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বীন আহসান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নান উৎসব উপলক্ষে পাথরঘাটায় যে মেলা বসেছে, সেই মেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৬এপ্রিল/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন