ভিন্ন স্বাদের বৈচিত্র্যময় তিন পদ
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাঙালি পাতে পেতে চায় বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার। পোলাওয়ের সাথে কাটা মসলায় বিফ ভুনা এবং শেষে মুখ মিঠাই করতে শাহী জর্দা থাকলে উদরপূর্তির সঙ্গে মনের তৃপ্তি মেলে। ব্যস্ততম দিনেও দ্রুত সময়ে তৈরি করতে পারেন এই তিন পদ। রেসিপি দিয়েছেন সেরা রাঁধুনি প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ পুরস্কার জেতা রন্ধনশিল্পী নাদিয়া নাতাশা
কাটা মসলায় বিফ ভুনা
উপকরণ
গরুর মাংস: এক কেজি ৫০০ গ্রাম
তেল: ১ কাপ
আদা, রসুন, পেঁয়াজ: কিউব করে কাটা পরিমাণমতো
জিরা গুঁড়া: ১ চা চামচ
শুকনা মরিচ: ৮-১০টা
লবণ, তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ:
পরিমাণমতো
প্রণালি
মাংস কেটে ধুয়ে নিন। যে পাত্রে রান্না করবেন, সেখানে মাংস রেখে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, লবণ দিয়ে মেখে নিন।
এরপর মাঝারি আঁচে চুলায় দিয়ে কষিয়ে নিন।
কষানো মাংসে সিদ্ধ হওয়ার মতো পানি দিন।
পানি শুকিয়ে এলে ৮-১০টা শুকনা মরিচ দিয়ে দিন।
আবার একটু নাড়ুন।
এই ফাঁকে আলাদা একটা পাত্রে কয়েকটি পেঁয়াজ কুচি করে তেলে ভেজে বেরেস্তা করে নিন।
মাংস শুকিয়ে এলে জিরা গুঁড়া দিন।
এরপর পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন
পোলাও
উপকরণ
সয়াবিন তেল: ১/৪ কাপ
শাহী জিরা: ১/৪ চা চামচ
তেজপাতা: ২টি
দারুচিনি: ২ টুকরা
এলাচ: কয়েকটি
লবঙ্গ: কয়েকটি
পেঁয়াজ কুচি: আধা কাপ
কালিজিরা পোলাওয়ের চাল: ২ কাপ
আদা বাটা: ১ চা চামচ
রসুন বাটা: আধা চা চামচ
কাজুবাদাম অথবা কাঠবাদাম বাটা: ২ টেবিল চামচ
লবণ: স্বাদ মতো
আস্ত কাঁচামরিচ: ৭/৮টি
বাটার অয়েল অথবা ঘি: ২ টেবিল চামচ
আলুবোখারা: ৩টি
কিশমিশ: ১ টেবিল চামচ
গোলাপজল: কয়েক ফোঁটা
কেওড়া জল: কয়েক ফোঁটা
প্রণালি
হাঁড়িতে সয়াবিন তেল দিয়ে শাহী জিরা, তেজপাতা, লবঙ্গ, এলাচ ও দারুচিনি দিয়ে দিন। তেজপাতা সামান্য ছিঁড়ে দেবেন। সামান্য ভেজে নিন তেলে। বুদবুদ উঠলে পেঁয়াজকুচি দিয়ে নাড়তে থাকুন। বেশি ভাজার দরকার নেই। পেঁয়াজের রং সাদাটে থাকা অবস্থায়ই পোলাওয়ের চাল দিয়ে দিন। হাঁড়িতে দেওয়া আধা ঘণ্টা আগে চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখবেন। এতে ঝরঝরে হবে পোলাও। একটু সময় নিয়ে চাল ভাজুন। সুগন্ধ বের হওয়া শুরু করলে গরম পানি দিয়ে দিন। যে কাপে চাল মেপেছেন, সেই কাপের দ্বিগুণ পানি দিতে হয় পোলাও রান্নার জন্য। তবে বিয়ে বাড়ির পোলাওয়ের ক্ষেত্রে বাবুর্চিরা পানির সঙ্গে দুধ ব্যবহার করেন। একদম পারফেক্ট স্বাদের বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্না করতে চাইলে তাই ৩ কাপ পানি ও ১ কাপ দুধ দিন। পানি ও দুধ ফুটন্ত গরম হতে হবে। আদা ও রসুন বাটা দিয়ে দিন। বাদাম বাটা ও লবণ দিয়ে চুলার আঁচ মিডিয়াম টু হাই করে দিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। চাল ও পানির লেভেল সমান হয়ে আসলে আরেকটু নেড়ে আস্ত কাঁচামরিচ দিন।
শাহী জর্দা
উপকরণ
চিনি গুড়া চাল বা বাসমতির চাল: ২৫০ গ্রাম
এলাচ: ৬-৭ টি
দারুচিনি: ৪-৫টি
লবঙ্গ: ২-৪টি
চিনি: ২০০-২৫০ গ্রাম
আনারস: ৪ ভাগের ১ ভাগ ছোটো ছোটো টুকরা করে রসসহ।
ঘি: ২-৩ চা চামচ
তেল: সিকি কাপ
কিশমিশ: ১ মুঠো
জর্দা রঙ/ ফুড কালার: ১-২ চা চামচ
মোরব্বা কুচি: পরিমাণ মতো
বাদাম কুচি: পরিমাণ মতো
বেবি সুইটস: ১২-১৫টি
প্রণালি
প্রথমে চাল ভালো করে ধুয়ে ঝরিয়ে রেখে দিতে হবে। পোলাওর চাল হলে ১৫ মিনিট আর বাসমতি চাল হলে ২৫ মিনিট। এতে করে রান্নার পর চাল ভেঙে যাবে না আর লম্বাটে হবে। এরপর পরিমাণ মতো পানি, তেজপাতা, সামান্য লবণ, ১ চা চামচ তেল ও জর্দার রঙ মিশিয়ে পানি ফুটলে চালগুলো দিয়ে ৫-৮ মিনিট সিদ্ধ করে নিতে হবে। পোলাওয়ের চাল হলে ৫-৬ মিনিট আর বাসমতি চাল হলে ৭-৮ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে। এখন চালগুলোকে ছেকে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে।
এবার একটি প্যানে ঘি গরম করে মিডিয়াম আঁচে আস্ত গরম মসলাগুলো একটু ভাজা ভাজা হলে আনারসের টুকরাগুলো, চিনি এবং পানি দিয়ে একসাথে নাড়তে থাকুন। পানি বলক আসলে সিদ্ধ চাল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে দিতে হবে। এবার ঢেকে দিয়ে চুলা মিডিয়াম আঁচ থেকেও কমিয়ে দিয়ে ১০-১৫ মিনিট রান্না করতে হবে। ১৫ মিনিট পর ১ চা চামচ ঘি দিয়ে হালকা নেড়ে দিন। এবার ১০-১৫ মিনিট ঢেকে দমে রেখে দিন এবং খেয়াল রাখতে হবে সিদ্ধ ভাতটা যাতে বেশি ফুটে না যায়। এখন জর্দাটা নামিয়ে বাদাম কুচি এবং বেবি সুইটস দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।