উপজেলা নির্বাচন সরকারের আরেকটা ‘ভাঁওতাবাজি': আমীর খসরু
![](/assets/news_photos/2024/04/17/image-350314.jpg)
উপজেলা নির্বাচন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আরেকটা ‘ভোটচুরির ভাঁওতাবাজি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বুধবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির উদ্যোগে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রকাশের দিনটি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ করে। এর ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা এবং ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে প্র্রবাসী সরকার শপথ গ্রহণ করে। আলোচনা সভায় প্রজাতন্ত্র দিবসের দাবি উপস্থাপন করেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ওরা উপজেলা নির্বাচন দিয়েছে। যে দেশে ভোট নাই সেই দেশে ভোটে অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগ নাই। যেখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নাই, যেখানে কোনো পার্টিসিপেশন নাই, সেখানে আবার কীসের ভোট? সুতরাং এই যে উপজেলা নির্বাচন এটা আরেকটা দেশের মানুষকে একটা ধাপ্পাবাজির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা ভোটের নামে ভাঁওতাবাজি। ভোট বলে কিছু নাই এই দেশে। একটা ভোটচুরি প্রকল্পের মাধ্যমে সমস্ত জাতিকে আজকে তারা (সরকার) জিম্মি করে রেখেছে।
সরকারের এমন অপকর্মের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর ‘ঐক্য অটুট’ থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের সুখবর হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ আজকে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। আমরা যারা বিরোধী দলে আছি আমাদের ঐক্য অটুট আছে, বিএনপির ঐক্য অটুট আছে।’
আমীর খসরু বলেন, বিএনপির ঐক্য ভাঙার চেষ্টা কোনো কিছু বাকি নাই। টাকা-পয়সা থেকে ভয়ভীতি থেকে, জেল-জুলুম থেকে, নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে সব চেষ্টা করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ধান ক্ষেতে ঘুমিয়েছে, বেড়ি বাঁধে ঘুমিয়েছে কিন্তু নেতাকর্মী কমপ্রোমাইজ করেনি, বিরোধী দলের নেতারা কেউ কমপ্রোমাইজ করেনি। আমরা ৩১ দফা ঐক্যবদ্ধভাবে দিয়েছি… এটা চলমান আন্দোলনের দফা অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সাম্য-মানবিক মর্যাদা, ন্যায় বিচার ইত্যাদি বিষয়ে আমরা এক হয়েছি। আমাদের এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। আমাদের এই আন্দোলন চলমান আছে।
৭ জানুয়ারির ভোটে ৯৫ শতাংশ ভোটার না যাওয়া থেকে চলমান আন্দোলনের বিরোধী দলের ‘রাজনৈতিক সফলতা’ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ৯৫ শতাংশ মানুষ ওই নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যায়নি। এবার সেই চিন্তা থেকে সরকার ভোটারদের আনতে নতুন কৌশল নিয়েছে। এবার তারা চিন্তা করেছে যে, মানুষ নৌকাকে ভয় পায়, নৌকার কথা শুনলে বোধহয় ভোট কেন্দ্রে যাবে না। সেজন্য নির্বাচনে তারা এবার দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে দিয়েছে। অথচ তারাই স্থানীয় সরকার আইন করেছে নৌকা দিয়ে অর্থাৎ দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করার জন্য। আইনটা কিন্তু বাতিল করেনি।
আমীর খসরু বলেন, আইন মেনে আওয়ামী লীগ এখন নৌকা প্রতীক নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছে না। কারণ ওরা দেখছে, বাংলাদেশের জনগণ নৌকা যেখানে আছে তারা সেখানে নাই। তারা নৌকা বয়কট করেছে। তাই এই উপজেলা নির্বাচন আরেকটি ভাঁওতাবাজির নির্বাচন। ভোটচুরি প্রকল্পই তাদের ক্ষমতার উৎস, এই ভোটচুরির প্রকল্প তাদের ক্ষমতায় রাখার ব্যবস্থা করেছে।
বিএনপি ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা, যারা জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের এদেশে বসবাস করা সম্ভব নয়। এই খুনিদের, এই জুলুমবাজ, দখলদার সরকারকে বিতাড়িত না করতে পারলে এদেশ সাধারণ মানুষদের বসবাস কঠিন হয়ে পড়বে।
এই দেশ আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম। এমন দৃশ্য এমন পরিবেশ দেখার জন্য নয়। গণতন্ত্র থাকবে না সেজন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না সেজন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি। এই কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না। আপনারা জেগে উঠুন…দেশকে বাঁচান, মানুষকে বাঁচান। এই গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইকে এগিয়ে নিন, এদেরকে পরাজিত করুন।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মাত্র কত বছর বয়স ছিল রব ভাই বলতে পারবেন স্বাধীনতার পতাকা (একাত্তরের ২ মার্চ) দেখানো হয়েছে মানুষকে। এই পতাকা রক্ষা করবার জন্য লড়াই করতে হবে, যুদ্ধ করতে হবে। মানুষ যুদ্ধ করেছে এবং আমরা জিতেছি… কল্পনার মধ্যে ছিল কারো… এ রকম হতে পারে ভাবতে পেরেছেন আগে। কিন্তু তা হয়েছে।
আজও মানুষের মধ্যে বিক্ষোভের যে আগুন জ্বলছে, সেই আগুনকে ঠিক মতো গুছিয়ে সেটাকে একটা দাবানল তৈরি না করলে বিক্ষোভে আন্দোলনে রূপান্তরিত করা সম্ভব নয়। আমি মনে করি, এটার জন্য কোনো হঠকারী কর্মসূচির কথা আমি তো বলবই না…কারণ হঠকারী কোনোদিন গণতন্ত্রের জন্য সুখকর হয় না, সফলতার দিকে নিয়ে যায় না। কিন্তু গঠনমূলকভাবে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। যত দেরি হবে তত আমাদের জন্য ক্ষতি হবে।
শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, কে এম জাবির প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/জেবি/কেএম)
সংবাদটি শেয়ার করুন
রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
রাজনীতি এর সর্বশেষ
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360313.jpg)
হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার এড়াতে পারবে না: জাতীয় নেতৃবৃন্দ
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360307-1722010587.jpg)
জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360306.jpg)
সেতু ভবনে হামলা: রিমান্ড শেষে কারাগারে নুর
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360300.jpg)
এবি পার্টি নেতা খালিদ হাসানের গ্রেপ্তারে দলীয় নেতাদের নিন্দা, মুক্তি দাবি
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360297.jpg)
সরকারের বর্বরতা যেকোনো স্বৈরাচারের নির্মমতাকেও হার মানিয়েছে: ফখরুল
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360283.jpg)
প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে: ওবায়দুল কাদের
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360250.jpg)
মহানগর উত্তর আ.লীগের সমন্বয় সভায় কী নিয়ে হট্টগোল?
![](/cache-images/news_photos/2024/07/26/resize-90x60x0image-360245.jpg)
ভেঙে দেওয়া হলো মহানগর উত্তর আ.লীগের ২৭ ইউনিট কমিটি
![](/cache-images/news_photos/2024/07/25/resize-90x60x0image-360238.jpg)
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ২২ ছাত্রসংগঠনের প্রতিবাদ
![](/cache-images/news_photos/2024/07/25/resize-90x60x0image-360236.jpg)