১৪ দলের বৈঠকে নেতাদের ক্ষোভ, শেখ হাসিনা বললেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ মে ২০২৪, ১৭:৫৬
বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকের ফাঁকে নেতারা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শরিক দলের নেতারা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলের নেতাদের ঐক্যবন্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘১৪ দলের দূরত্ব কমিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে আরও সংগঠিত হতে হবে।’

বৃহস্পতিবার গণভবনে জোটনেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দল নেতাদের বৈঠক হয়। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া বৈঠকে সূচনা বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর শুরু হয় ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচানা। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে এই বৈঠক।

জাতীয় নির্বাচনের পর ১৪ দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার এটাই প্রথম বৈঠক।

বৈঠকে আলোচনার মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীসহ আরও কয়েকজন।

গণভবনে বৈঠকের দুইদিন আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে জোটের শরিক দলের কয়েকজন নেতা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। তারা জোটের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ধারণা পাওয়া এবং ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন। তারা সিদ্ধান্ত নেন ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ না থাকলেও তারা জোটের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে জোটের দলগুলোর কর্মী-সমর্থক নেই আওয়ামী লীগের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেন তারা। শরিকরা বলেন, জোট করা হয়েছে আদর্শের ভিত্তিতে, কার কী ভোট আছে সেটি দেখে নয়। যদি তাই হয় তাহলে কক্সবাজার-১ আসন থেকে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিমকে কোন ক্রাইটেরিয়ায় সমর্থন দেওয়া হয়েছে। তার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে তাকে কক্সবাজারের এমপি বানানো হয়েছে। ওই এলাকায় তার তো কর্মীও নেই, সমর্থকও নেই।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম এই বৈঠকে সরাসরি জোটনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ক্ষোভের কথা জানালেন ১৪ দলের শরিক নেতারা। নির্বাচন ও সরকার গঠনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে না পাওয়ার কথা তুলে ধরে জোটের প্রাসঙ্গিকতা ও ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।

তাদের বক্তব্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সাম্প্রদায়িকতা, নিজেদের প্রাপ্য সম্মান, ১৪ দলের ঐক্য, আগামী দিনের কর্মসূচিসহ নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে। জোটপ্রধান শেখ হাসিনাও তাদের কথা-ক্ষোভ মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের কথার জবাব দেন। বৈঠকে তিনি শরিক দলের নেতাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘জোট এবং জোটের প্রাসঙ্গিকতা অবশ্যই আছে। আছে বলেই আপনাদের সঙ্গে বসলাম।’

এ সময় তিনি সবাইকে নিজ নিজ দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ১৪ দলীয় জোটকে আরও বেশি কার্যকর, নিয়মিত কর্মসূচি পালন করাসহ নানা বিষয়ে শরিক নেতাদের পরামর্শ দেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জোটনেতা নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের পর জোটের বৈঠক হয়েছে। সব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। জোটের নেতারা তাদের ক্ষোভ অসন্তোষের কথা জোটনেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন। তিনিও বিভিন্ন শুনে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।’

বৈঠকে শেষে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘একজন ব্যক্তির অসহযোগিতার কারণে রাজশাহীতে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হেরে যান। জাসদের সভাপতিকেও হারতে হয়েছে।’

এসবের প্রেক্ষাপটে ১৪ দলের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ১৪ দলীয় জোটের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী, জোটের রাজনীতি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, তা জোটনেত্রীর কাছে জানতে চান মেনন।

মেনন বলেন, ‘আমরা একটা আদর্শের ভিত্তিতে ১৪ দলীয় জোট গঠন করেছিলাম; কিন্তু আজ জোটের রাজনীতি নেই। জোটের নেতাদের নানাভাবে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। ১৪ দলের রাজনীতি এভাবে চলতে পারে না। জোট কীভাবে চলবে, তা পরিষ্কার হওয়া দরকার।’

বৈঠক শেষে গণভবনের সামনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে ১৪ দলকে আরও সংগঠিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ বৈঠকের পর ১৪ দলের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেটা থাকবে না। জোটের নিজ নিজ দলকে আরও সংগঠিত এবং জনগণের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে ১৪ দলের নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দিয়েছেন জোটনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/২৪মে/জেএ/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

কারাবন্দি যুবদলের সাবেক সভাপতি নিরবের বাসায় টুকু

দেশের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত: হানিফ

বিএনপির সিনিয়র নেতারা কে কোথায় ঈদ করবেন?

ভারত-মিয়ানমার কোনো সীমান্তেই দেশের মানুষ নিরাপদ নয়: রিজভী

পশু কোরবানির সঙ্গ দুর্নীতি কোরবানি করতে হবে, ঈদ শুভেচ্ছায় জিএম কাদের

সেন্ট মার্টিন নিয়ে ফখরুলের বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন: ওবায়দুল কাদের

মিয়ানমার আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা করছে: জিএম কাদের

ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক 

মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্রশিবির

আওয়ামী সরকারের দুর্নীতির শিকড় দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে: আমিনুল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :