বিমানে মদপানে ঘটতে পারে বিপদ! গবেষণা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ জুন ২০২৪, ০৯:২১
অ- অ+

বিমানযাত্রায় বিমানযাত্রীদের অ্যালকোহল বা মদ পান সাধারণ বিষয়। যাত্রী পরিষেবার অঙ্গ হিসাবে বহু বিমান সংস্থাই অ্যালকোহল পরিবেশন করে থাকে। পছন্দের পানীয় পেয়ে অনেক যাত্রী তা উপভোগ করেন। মাঝেমধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে যা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। বিমানের মধ্যে মদ খেয়ে প্রকাশ্যে যৌনকর্ম ও অন্য যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচারণ কিংবা প্রস্রাব করে দেওয়ার মতোও ঘটনা হয়ে থাকে। কিন্তু জানেন কি, মাঝ আকাশে মদ্যপান, তা-ও যদি হয় অতিরিক্ত, ঘটাতে পারে বড় বিপদ। কারণ মদ পান করলে শরীরে বাড়তি প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের সহ্যক্ষমতার বেশি পান করলে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতেই হবে। কারণ মস্তিষ্কের উপর অ্যালকোহলের প্রভাব ভয়ঙ্কর। বেশি পরিমাণে মদ্যপান করলে নিয়ন্ত্রণ হারানো স্বাভাবিক।

‘থোরাক্স’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার ফল বলছে, বিমানে বসে মদ্যপান ও তার পর ঘুম হার্টের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে দীর্ঘ বিমানযাত্রার ক্ষেত্রে। আচমকা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে ও হৃদ্‌যন্ত্রের গতি বেড়ে গিয়ে ঘটতে পারে বিপদ। এমনকি কমবয়সিদের ক্ষেত্রেও তা নিরাপদ নয়।

আকাশে বেশি উচ্চতায় বাতাসের চাপ ও অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে। বিমান অনেক উঁচু দিয়েই ওড়ে। উচ্চতাজনিত কারণে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়তে পারে শরীরে। ফুসফুস ও শরীরে অক্সিজেন কম পৌঁছনোর ফলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সাধারণত বেশি উচ্চতায় অনেকেরই বিভিন্ন রকম সমস্যা হয়। তার মধ্যে থাকে মাথা ধরা, কানের পাশে ব্যথা হওয়া, নাক দিয়ে জল পড়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বুকে চাপ লাগার মতো উপসর্গ। কারও ক্ষেত্রে উচ্চতাজনিত কারণে অক্সিজেনের মাত্রা কমার প্রভাব আরও সাংঘাতিক হতে পারে। হার্টে, ফুসফুসে ও মস্তিষ্কে এর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।

অ্যালকোহল রক্তবাহগুলিকে শিথিল করে দেয়। মদ্যপানের পর হৃদ্‌যন্ত্রের গতি বেড়ে যায়। বাড়তি অক্সিজেনের দরকার হয়। মদ্যপানের পর কেউ ঘুমিয়ে পড়লে অক্সিজেনের অভাব বা কোনও কষ্ট হয়তো সেই মুহূর্তে তিনি বুঝতেও পারবেন না। এ ক্ষেত্রে উচ্চতাজনিত কারণে বিমানে শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

‘থোরাক্স’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটি জানাচ্ছে, ৪৮ জনকে নিয়ে এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়। ২৪ জন করে দু’টি দল তৈরি করা হয়। প্রত্যেককে মদ্যপানের পর ঘুমিয়ে পড়তে বলা হয়। ২৪ জনকে রাখা হয় সাধারণ জায়গায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৪৩৮ মিটার উচ্চতায় বাতাসের যে চাপ ও অক্সিজেনের মাত্রা থাকে, সেই পরিবেশ তৈরি করে অন্য ২৪ জনকে ঘুমোতে দেওয়া হয়। ফলাফলে দেখা যায়, বেশি উচ্চতার পরিবেশে যাঁদের রাখা হয়েছিল তাঁদের শরীরে তা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। হৃদ্‌যন্ত্রে চাপ পড়ছে। এমনকি, কমবয়সিদের ক্ষেত্রেও তা ঘটছে। সমীক্ষালব্ধ ফল থেকেই পরামর্শ, বিমানে বসে অতিরিক্ত মদ্যপান কখনও কারও কারও ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যালকোহল একটি নিষ্ক্রিয়কারী (নিউট্রিলাইজিং) এজেন্ট। মদ কতটা পান করছেন, তার উপর নির্ভর করছে কতটা প্রভাব বিস্তার করবে। সাধারণত দুই পেগ অ্যালকোহল পান করার পরেই (৬০ মিলিলিটার) ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেন। সেবন যত বাড়তে থাকে, ততই অসংলগ্ন আচরণ বাড়তে থাকে। একইসঙ্গে কথা ঝাপসা হতে থাকে। সোজা হয়ে হাঁটহাঁটি করার ক্ষমতা থাকে না। খুব উচ্চস্তরের নেশা হলে ব্যক্তিটি কোমাতেও চলে যেতে পারেন। এমনকী মৃত্যুও হতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/৫ জুন/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মুন্সীগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে দিনমজুরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
উত্তরা আবাসিক এলাকা পরিদর্শনে রাজউক চেয়ারম্যান, দখলকৃত প্লট উদ্ধারের নির্দেশ
চীনের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত আলোচনায় বসতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র
ধর্ম মন্ত্রণালযের অনুরোধ: অনুমতি ছাড়া হজ নয়
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা