বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের চার ধরনের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস শি জিনপিংয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০২৪, ২১:৪৮
অ- অ+

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে চীন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের উন্নয়নে দেশটির সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেছেন, চীন বাংলাদেশকে চারটি উপায়ে- অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ বাণিজ্যিক ঋণ দিয়ে সাহায্য করবে।

বুধবার বিকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট এসব আশ্বাস দেন। দুই নেতার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্যাপারে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী . হাছান মাহমুদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতার মধ্যে অত্যন্ত সফল আলোচনা হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তার জন্য কীভাবে চার ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে- সে ব্যাপারে দুই দেশের কারিগরি কমিটি একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, চীন থেকে একটি কারিগরি কমিটি শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে।

. হাছান জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা বিষয়টি উত্থাপনের আগেই চীনের প্রেসিডেন্ট ইস্যুটি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেন। শি জিনপিং বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার সরকার আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করব।তিনি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের আবেদন জানালে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা বাংলাদেশে ক্রমাগত আরও বিনিয়োগ করতে চাই। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহায়তা কামনা করেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক দশকে চীনের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি অনুপ্রেরণা।প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো কিছু আইকনিক অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে উভয় নেতা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শি জিনপিং বলেন, ‘আমরা, দুটি দেশ, আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করতে যাচ্ছি। এই উদযাপন উপলক্ষ্যে আমরা বিদ্যমান কৌশলগত সম্পর্ককে দ্বিতীয় ধাপে নিয়ে যেতে চাই।

শেখ হাসিনা দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং ব্যবধান কমাতে চীনের প্রতি আহ্বান জানান। জবাবে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করব। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করবে।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বাস্তবায়নাধীন আইটি ভিলেজগুলোতে আরও বিনিয়োগ করার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান। জবাবে শি বলেন, তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে চান। চীনের প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব শান্তি সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় চীন বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে চীনের সহায়তাও চেয়েছেন। জবাবে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, একটি দেশের জন্য কৃষিতে স্বাবলম্বী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কারিগরি সহায়তা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশকে খাতে সাহায্য করার আশ্বাস দেন। শি জিনপিং আরও সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

উভয় নেতা আওয়ামী লীগ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান। শি বলেছেন, ‘আইনের শাসন নিশ্চিত করা সুরাজনৈতিক দলগুলির জন্য অধিকতর জরুরি।

প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
২০ আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হাইকোর্টে বহাল রাখায় সন্তুষ্টি প্রকাশ আবরারের মায়ের
ময়মনসিংহের ভালুকায় শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের উদ্বোধন 
মুশফিক-রিয়াদরা মাঠ থেকে বিদায় না নেওয়ায় আক্ষেপ মিরাজের
পর্তুগালের প্রবাসী নারী উদ্যোক্তাদের ঈদ মেলা  
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা