পরকীয়া প্রেমের অভিযোগে অভিনেত্রী মিহির সংসারে ফাটল!

ছোটপর্দার অভিনেত্রী মিহি আহসান। ২০১৭ সালে তার অভিনয়ের ক্যারিয়ার শুরু। বর্তমানে তিনি নিয়মিত নাটকে কাজ করছেন। শোবিজে নাম লেখানোর আগে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন। স্ত্রীর স্বপ্ন পূরণে ওই ব্যবসায়ী মিহিকে নিয়ে প্রায় এক ডজনের মতো নাটক প্রযোজনা করেন।
মাত্র দুই মাসের পরিচয়ে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ওই ব্যবসায়ীকেই ভালোবেসে বিয়ে করেন মিহি। তার স্বামীর নাম শুভ চৌধুরী (মো. জাহাঙ্গীর কামাল)। এ দম্পতির সন্তানও আছে। বিয়ে, স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে মিহির বিভিন্ন সময়ের কিছু ছবি ও ভিডিওর খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
জানা গেছে, মিরপুর থাকাকালীন ওই ব্যবসায়ীর প্রেমে পড়েন মিহি। পড়তেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওই ব্যবসায়ী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে মিহির সিনিয়র ভাই। অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে পরিবারকে না জানিয়ে তারা বিয়ে করেন। ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি হয় তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। একই বছরের ২১ অক্টোবর তাদের ঘরে জন্ম নেয় পুত্রসন্তান।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বর্তমানে ভালো যাচ্ছে না মিহি ও শুভ চৌধুরীর সংসার। নেপথ্যে অভিনেত্রীর পরকীয়া। স্বামীর অভিযোগ, হিমু আকরাম নামে এক নাট্যপরিচালকের সঙ্গে প্রেম করছেন অভিনেত্রী। বিদেশে শুটিংয়ের কথা বলে প্রায়ই নাকি তার সঙ্গে অবকাশ যাপনে যান মিহি। সর্বশেষ নেপাল ও মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের ঝগড়া হয় বলে জানা গেছে।
গুঞ্জন, মিহির প্রেমিকের তালিকায় এক চলচ্চিত্র নায়ক, নাট্য অভিনেতা এবং ক্যামেরাম্যানও আছেন। তবে মূল সমস্যা হিমু আকরাম। এমনই দাবি অভিনেত্রীর স্বামী শুভ চৌধুরীর। এর আগে এক চলচ্চিত্র পরিচালকের সঙ্গে মিহির প্রেম ছিল বলে জানা যায়। এসব কেন্দ্র করে কোরবানির ঈদের পর থেকে বেশ জটিলতা দেখা দিয়েছে তাদের সংসারে।
মিহির গার্মেন্টস ব্যবসায়ী স্বামী শুভ জানিয়েছেন, ‘স্ত্রীকে তিনি গাজীপুরে একটি জমি কিনে দিয়েছেন এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে। তাদের এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হলেও পরবর্তীতে পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠান হলে তখন মিহির মায়ের চাওয়াতে পুনরায় তাদের দেনমোহর হয় এক কোটি টাকা। সেসময় মিহিকে ৩০ ভরি অলংকার দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন স্বামী।
মিহির স্বামী বলেন, ‘দুই মাসের পরিচয়ে আমরা বিয়ে করি। আমরা মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। মিহির পরিবার মিডিয়ায় কাজ করায় সাপোর্ট করত না। তখন মিহি আমার কাছে সহযোগিতা চাইলে সাপোর্ট করি। একটা পর্যায়ে আমরা বিয়ে করি। পরবর্তীতে দুই পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নেয়। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। তবে চলচ্চিত্র পরিচালক রিয়াজুল রিজুর সঙ্গে মিহির প্রেম নিয়ে সংসারে অশান্তির শুরু। শুটিংয়ের কথা বলে রিজুর সঙ্গে রাতে থাকতো। যখন বিষয়গুলো জানতে পারি তখন আমাদের মধ্যে ঝামেলা তৈরি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নেপালের শুটিং ঘিরেও ঝামেলা তৈরি হয়েছিল। যাহের আলভীর বিপরীতে সেখানে কাজ করে। জানতে পারি সেখানে কিছু ঝামেলা হয়েছিল। দুজনকে ঘিরে মিডিয়ায় অনেক মুখরোচক খবর চাউর রয়েছে। এরপর তাদের একসঙ্গে কাজে দেখা যায়নি। সর্বশেষ পরিচালক হিমু আকরামের সঙ্গে প্রেম নিয়ে সংসারে মূল সমস্যা তৈরি হয়েছে। হিমু আকরামকে স্বামী বলেও পরিচয় দেয় মিহি। ঘটনাটি পরিবারকে জানাই। সে (মিহি) বিভিন্ন জায়গায় বলছে আমাদের ডিভোর্স হয়েছে। এখনো আমাদের ডিভোর্স হয়নি। সে মিডিয়ায় নিয়মিত কাজ করুক আমার আপত্তি নেই। তবে কারও সঙ্গে সম্পর্কে না জড়াক সেটাই চাওয়া। আমি সংসারটি করতে চাই।’
এ প্রসঙ্গে মিহির সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিয়ে ও সন্তানের কথা শিকার করেন। বলেন, ‘আমি তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছি গত ৩০ জুন, যা কার্যকর হতে তিন মাস সময় লাগবে। দীর্ঘ সময় ধরে তার সঙ্গে আমার ঝামেলা চলছে। আমার নামে ভিত্তিহীন কথা বলার জন্য তাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। তার নামে সাইবার ক্রাইমে মামলাও করেছি, সেটির তদন্ত চলছে।’
নাট্য নির্মাতা হিমু আকরামের সঙ্গে প্রেম বিষয়ে মিহি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। তিনি (স্বামী শুভ) যদি আমার সম্মানের কথা চিন্তা করতেন, তাহলে এ ধরনের কথা বলতেন না।’
মিহির দাবি তার স্বামী দুবাই পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘শুভ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। সেগুলোতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে শুভর নামে। এমন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা আমার ও বাচ্চার জন্য খারাপ কিছুই হবে।’
চলচ্চিত্র পরিচালক রিয়াজুল রিজু, অভিনেতা জামিল হোসেন, যাহের আলভী, ক্যামেরাম্যান কামরুল ইসলাম শুভর সঙ্গে তার প্রেমের বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন মিহি। বলেন, ‘কাউকে যখন কিছুতে আটকাতে পারে না তখন এ ধরনের মিথ্যা বানোয়াট কথা ছড়ায়। এই মানুষগুলো যদি তার (শুভ) নামে মানহানি মামলা করে তখন কী করবে? এগুলোর প্রমাণ নেই। কাজ করলেই কি তাদের সাথে প্রেম হয়ে যায়? যদি হয়ে থাকে প্রমাণ করুক। নিজের বদনাম ডাকার জন্য আমার নামে বদনাম করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে মিডিয়ায় কাজ করছি, আমার নামে কোনো বদনাম নেই।’
মিহি আরও বলেন, ‘সে যদি আমার সঙ্গে সংসার করতে চাইত তাহলে আমার নামে এ ধরনের কথা ছড়াতো না। সে দুই বছর ধরে আমার ও সন্তানের খোঁজ নেয় না এবং ভরণ-পোষণও দেয় না। তার তো উচিত পরিবার নিয়ে বসে সমাধান করা। অথচ সে নোংরা মানুষের মতো কাজ করছে। সে বিবাহিত, এটা লুকিয়ে আমাকে বিয়ে করেছে। সেই ঘরেও একটি সন্তান আছে। এত কিছু জানার পরও সন্তানের কথা ভেবে ও মায়ার টানে আমি তাকে ছেড়ে যাইনি। যখন জানতে পারি তিনি প্রতারক, তখন তার থেকে দূরে সরে যাই।’
মিহির দাবি, ‘শুভ মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম ব্যবসা করে। তার নামে অনেক মামলা আছে। সে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী না।’
তবে মিহির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তার স্বামী শুভ। বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে ব্যবসার কাজে দুবাই আছি। আগামী মাসে দেশে ফিরব। মিহি যেসব অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। আমার গার্মেন্টস ব্যবসা আছে। ট্রেড লাইসেন্স আছে। তবে ব্যবসায়িক একটা চেক নিয়ে মামলা হয়েছিল, পরবর্তীতে সেটির সমাধান হয়েছে।’
অন্যদিকে নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে হিমু আকরাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সে (শুভ) এলএমএল ব্যবসা করে, দেশের বাইরে (দুবাই) পলাতক আছে, এটা মিডিয়ার অনেকেই জানে। এটা নিয়ে সংবাদও প্রকাশ পেয়েছে। সে যে বিষয়টা বলেছে এটা নিয়ে আমার মন্তব্য, কাজের বাইরে।’
তার দাবি, ‘মিহির সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা নাই। আমাদের জাস্ট কাজের সম্পর্ক। তাকে নিয়ে এক বছর আগে একটি ওয়েব ফিল্ম বানিয়েছিলাম। নাম ‘সন্ধ্যা নামের নদীটা’।
(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/এলএম/এজে)

মন্তব্য করুন