কোটা সংস্কার আন্দোলন: চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৩

চট্টগ্রামে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন শিক্ষার্থী ও একজন পথচারী। অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি। নিহতদের একজনের বুকে ও একজনের পিঠে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।
মঙ্গলবার বিকাল চারটার দিকে নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহর আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন- চট্টগ্রাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ওয়াসিম আকরাম ও ফার্নিচারের দোকানে কর্মচারী পথচারী মো. ফারুক।
নিহত অপরজনের বয়স আনুমানিক ২৪ বছর। তার পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। অন্যদিকে ফারুকের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
তাদের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।
তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুজহাত বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ওয়াসিমের মৃত্যু হয়েছে গণপিটুনিতে।
ফারুক যেই ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতেন তার মালিক তাজুল ইসলাম জানান, দুপুরের খাবার খেতে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন ফারুক।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা টাইমসের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জানান, সোমবার সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে আজ দুপুর থেকেই নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিতে শুরু করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা।
অপরদিকে বিভিন্ন মোড়ে পাল্টা অবস্থান নিতে দেখা যায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের। নেতাকর্মীদের হাতে রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। কোটা আন্দোলনকারীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
দুপুর গড়াতে গড়াতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দুই নম্বর গেটের এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু ছাড়াও আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় ষোলশহর শিক্ষা বোর্ড এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। মুরাদপুর অংশে অবস্থান নিয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা। দুই নম্বর ও ষোলশহর এলাকায় অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে একই দিন দুপুরে রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন।
নিহত আবু সাঈদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের ছেলে। এনিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থী আন্দোলনে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল।
(ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/ইএস)

মন্তব্য করুন