সারা বিশ্বে মা দিবস পালিত হয় যে নারীর কারণে

আজ বিশ্ব মা দিবস। বিশ্বের প্রতি মায়ের জন্য শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা আর ভালবাসা প্রকাশের দিন আজ। তবে সন্তান লালনপালন ও শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে মায়ের প্রভাব ও ভূমিকা বেশি। কেননা, বাবা বা অন্য কারো পক্ষে এসব দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। কারণ, মাকে একাধারে গর্ভধারণী, স্তন্যদায়িনী, সেবিকা, ধাত্রী, শিক্ষায়িত্রী এবং অভিভাবিকা প্রভৃতির ন্যায় বহুমুখী ভূমিকা পালন করতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে সূচনা হলেও বর্তমানে বাংলাদেশসহ প্রায় সারা বিশ্বেই দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু জানেন কি, ১১ মে মা দিবসের পেছনে রয়েছে একজন নারীর অবিচল প্রচেষ্টা ও ভালোবাসার অনন্য ইতিহাস? সেই নারীর নাম আনা জারভিস, যিনি নিজের মাকে শ্রদ্ধা জানাতে এই দিবসের সূচনা করেন, যা পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। আনা জারভিসের ত্যাগ ও ভালোবাসা স্মরণীয় হয়ে থাকবে ইতিহাসের পাতায়।
মা দিবসের আধুনিক রূপে সূচনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯০৮ সালের ১২ মে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রাফটনে আনা জারভিসের মায়ের স্মরণে প্রথম মা দিবস পালিত হয়। এরপর দীর্ঘ প্রচারণা ও জনসমর্থনের মাধ্যমে ১৯১৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে জাতীয় মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।
আনা জারভিসের মা অ্যান জারভিস ছিলেন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। ১৮৬৮ সালে তিনি গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে "মাদার্স ফ্রেন্ডশিপ ডে" উদযাপনের আয়োজন করেছিলেন, যা ইউনিয়ন ও কনফেডারেট সেনাদের মধ্যে বন্ধনের প্রতীক ছিল। ছোটবেলায় মায়ের এক প্রার্থনা আনার হৃদয়ে গেঁথে যায়: “আমি আশা করি, কোনো একদিন কেউ একজন এমন একটি মা দিবস প্রতিষ্ঠা করবে, যেটি মায়েদের সেবার জন্য স্মরণ করবে।”
মায়ের মৃত্যুর পর সেই প্রার্থনাকে বাস্তব রূপ দিতে আনা জারভিস শুরু করেন চিঠি লেখা, জনসভার আয়োজন ও প্রচারণা। মা দিবসকে তিনি কেবল একটি “ব্যক্তিগত ও আন্তরিক দিবস” হিসেবে কল্পনা করেছিলেন—যেখানে পরিবার একত্র হবে, মা’কে সম্মান জানাবে।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মা দিবস হয়ে ওঠে একটি বাণিজ্যিক উৎসব। ফুল, কার্ড ও উপহারের আদান-প্রদান ছিল যেটির মূল বৈশিষ্ট্য, তা পরিণত হয় বিপুল বাণিজ্যে। প্রতিবছর শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই বিক্রি হয় ১০ কোটিরও বেশি মা দিবসের কার্ড। আনুষ্ঠানিক ফুল হিসেবে এখনো সাদা কার্নেশন বহুল ব্যবহৃত হয়—যা আনার মায়ের প্রিয় ছিল।
(ঢাকাটাইমস/১১ মে/আরজেড)

মন্তব্য করুন