ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে জবি শিক্ষার্থীরা
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রাজনৈতিক দলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) ফেসবুকে দেখা গেছে, নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও পেইজে পোস্ট দিয়ে এমন দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের ব্যাচভিত্তিক বিবৃতি দিয়েও এমন দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠন করে নির্বাচনের মাধ্যমে তা কার্যকর করার দাবি জানানো হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘ফ্যাসিস্ট’ শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার মুক্তির ৯ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে দলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এই দাবির সঙ্গে সংহতি রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে দলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে অনতিবিলম্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ গঠন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বমূলক একটি ছাত্র সংসদ কার্যকর করতে হবে। ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক-দলভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্ট ও বিবৃতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, ‘আমরা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, এই মর্মে স্পষ্ট বিবৃতি দিচ্ছি যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক দলভিত্তিক কোনো ছাত্ররাজনীতি আমরা চাই না। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার মুক্তির ৯ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা।’ এই দাবির সাথে সংহতি রেখে আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে দলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক এবং অনতিবিলম্বে জকসু গঠন করা হোক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যদি বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক দলভিত্তিক ছাত্ররাজনীতিতে জড়িত হয়, তবে তাকে বিভাগ থেকে বয়কট করা হবে। কোনো বিভাগীয় কার্যক্রমে সে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং তার সাথে কোনো শিক্ষার্থী ক্লাস-পরীক্ষায় বসবে না।
হাসিব শিকদার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনীতি চালু থাকলে তখন একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের আধিপত্য বিস্তার হয়ে যায়। আর তার ভুক্তভোগী হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা গায়ের জোরে ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এছাড়াও ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে বলি হতে হয় শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ ধরে রাখতে এবং প্রতিটা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও বাকস্বাধীনতার জন্য যত দ্রুত সম্ভব ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত।’
শরিফুল হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন বৈষম্যের বিরুদ্ধে, তাই আমরা চাই না কোনো প্রকার রাজনৈতিক আগ্রাসন ক্যাম্পাসে এসে রাজনৈতিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করুক। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি সরকার পতনের পরপরই অন্যান্য ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছে। আমরা একটি রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চেয়েছি। কোনো ধরনের রাজনৈতিক দলের লেজুড় সংগঠন আমাদের ক্যাম্পাসে জায়গা পাবে না।’
(ঢাকা টাইমস/০৮আগস্ট/এসএ)