প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে কোটা বাতিল, ৩য় ধাপের চূড়ান্ত ফল দ্রুত প্রকাশের দাবি
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত ্এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩, ৩য় ধাপ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) এর চূড়ান্ত ফলাফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী চাকরি প্রত্যাশী আন্দোলনকারীরা।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী চাকরি প্রত্যাশী আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু জাফর মো. আবু সালেহ।
আবু জাফর মো. আবু সালেহ বলেন, গত ২৯ মার্চ ২০২৪ সালে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় আমরা ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হই। গত ৯ মে থেকে ১২জুন পর্যন্ত এই ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার প্রায় ৩ মাস সময় অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ অনুসারে উক্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলা ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ শতাংশ ও পুরুষ ২০ শতাংশ ধার্য রয়েছে যা মেধার চূড়ান্ত অবমাননা বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, যেহেতু গত ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা সংক্রান্ত পূর্বের সকল পরিপত্র/প্রজ্ঞাপন/আদেশ/নির্দেশ/অনুশাসন রহিত করা হয়েছে, তাই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ৯৩ শতাংশ শতাংশ মেধা ও ৭ শতাংশ কোটা অনুসরণ করতে আইনগত কোনও জটিলতা থাকার কথা নয়। আমরা মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবি জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
এমতাবস্থায় বলতে চাই, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে এই কোটা প্রথা কোনোভাবেই বহাল থাকতে পারে না। কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এত প্রাণহানির পর কোনো অবস্থাতেই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ এ উল্লিখিত কোটা বহাল থাকতে পারে না। কোটা বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মেধাবীদের নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য আমরা দুই দফা দাবি পেশ করছি যা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ করতে হবে।
২ দফা দাবিসমূহ হলো:
১. প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত কোটা সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে ৯৩ শতাংশ মেধা ও ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩, ৩য় ধাপ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) এর চূড়ান্ত ফলাফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।
২. ৩১ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত শূন্য পদসমূহের বিপরীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
আন্দোলনকারীরা আগামী ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাদের এই দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী চাকরি প্রত্যাশী আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজল চন্দ্র রায়, সমন্বয়ক আশরাফুদ্দীন রমিজসহ মেধাভিত্তিক চাকরি প্রত্যাশীরা উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/০৯সেপ্টেম্বর/এমআই/এমআর)