ঝিনাইদহ-২ আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির চিঠি নিয়ে তোলপাড়

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো একটি চিঠি নিয়ে ঝিনাইদহ-২ আসনে (সদর ও হরিণাকুন্ডু) ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
এই চিঠিতে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানকে তার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠি পাওয়ার পর থেকে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তর্ক-বিতর্কে মেতে উঠেছেন নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে মো. রাশেদ খানকে দলীয় কার্যক্রমে সহায়তার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে তৃণমূলে ধারণা তৈরি হয় আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের মনোনয়ন পেতে পারেন মো. রাশেদ খান। কিন্তু তারা জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদকে এ আসনে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান।
বিএনপির নেতাকর্মীরা দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথেই তার নিবিড় সম্পর্ক এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে তার উপস্থিতি।
তবে চিঠিটি দলীয় মনোনয়ন সংক্রান্ত কিছু নয় বলে জানান ঝিনাইদহ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম পিন্টু। এটি বরং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার নির্দেশনা। এই নির্দেশনায় বিএনপি থেকে রাশেদ খানকে নমিনেশন কিংবা এই আসন তার জন্য ছেড়ে দেয়া হবে বা হয়েছে এমনটি বলা হয়নি। তবে সাধারণ ভোটাররা ঝিনাইদহ-২ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদকেই আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান বলে জানান পিন্টু।
ঝিনাইদহ জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিক রনক বলেন, আগামী দিনে দলকে আরও সু-সংগঠিত করে জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় ত্বরান্বিত করতে এম এ মজিদের কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগী দল হিসাবে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে তার রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে সহযোগিতার জন্য কেন্দ্রের নির্দেশনা চিঠি নিয়ে ঝিনাইদহের বিএনপির নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে বলে জানান জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল মাখন। ঝিনাইদহের নেতাকর্মীরা বিশ্বাস করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির মধ্য দিয়ে তৃণমূল থেকে উঠে আসা জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার বিরোধী আন্দোলনে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বলেন আসিফ ইকবাল।
তবে কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম শাহজাহান আলী। বলেন, এটি নির্বাচন বিষয়ক কোনো চিঠি নয়। এখানে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঝিনাইদহের নেতাকর্মীরা বিশ্বাস করে তৃণমূল থেকে উঠে আসা জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ একাদশ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। তিনি এম এ মজিদকেই ধানের শীষের প্রার্থী করবেন।’
এম এ মজিদের বাইরে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তৃণমূল তা মানবে না- এমনটাই বলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা। তিনি বলেন, ‘এম এ মজিদ নেতাকর্মীদের সাথে থেকে দলকে শক্তিশালী করেছেন। এখন অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে চাপিয়ে দিলে সেটি মেনে নেয়া হবে না।’
প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, নির্বাচনের জন্য নয়, বরং সাংগঠনিক সহায়তার জন্যই এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তবে নেতাকর্মীদের অভিযোগ, চিঠির ভুল ব্যাখ্যা করে রাশেদ খানের অনুসারীরা মনোনয়নপ্রাপ্তির প্রচারণা চালাছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/মোআ)

মন্তব্য করুন