অভ্যুত্থানের পর সরকারের কর্তব্য ছিল শিক্ষাখাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া: সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ মে ২০২৫, ২৩:২৭| আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ২৩:৪৬
অ- অ+

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, অভ্যুত্থানের পর সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য ছিল শিক্ষা খাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া। আমাদের একটা গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার তার জন্য সংস্কার দরকার। আমাদের সকল শিশুরা যাতে ছাত্র হয়ে উঠে তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য আমাদের যেমন বাজেট বরাদ্দ দরকার ঠিক তেমনি সকলে মিলে সেই গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার আদল তৈরি করা দরকার। ক্ষমতার কুক্ষিগতকরণ আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও তার বাইরে নয়। সেই জায়গা থেকে আমরা কীভাবে বের হতে পারি সে বিষয়ে সকলকে ঐক্যমত্যে আসা দরকার।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে 'শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারে' শীর্ষক অনুষ্ঠিত শিক্ষা সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান কান রিচার্ডের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফের সঞ্চালনায় শিক্ষা সংলাপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, শিক্ষক ও লেখক সফিক ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো সামীও শীশ, আমাদের পাঠশালার প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন, শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক হাসনাত কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আবু রায়হান খান।

শিক্ষা সংলাপের শুরুতেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শিক্ষা সংলাপে ছাত্র ফেডারেশনের প্রস্তাবনা পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান বিথী।

জোনায়েদ সাকি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, উল্লেখযোগ্য ভাবে বাজেটে শিক্ষা বরাদ্দ নিশ্চিত করুন,জনগণকে বুঝ দিবেন না। অনতিবিলম্বে শিক্ষকদের জন্যে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল গঠনের দাবিও তুলেন।

লেখক ও শিক্ষক সফিক ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার কিন্তু তা কোন কোন খাতে খরচ হচ্ছে তার দিকেও আমাদের নজর রাখা দরকার। ছাত্র ফেডারেশন স্বল্পমেয়াদে ৪ শতাংশ ও দীর্ঘমেয়াদে ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার আবেদন করেছে। কিন্তু এ বরাদ্দগুলো কোন খাতে খরচ হবে তা নিয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। জিডিপির যে ১.৭ শতাংশ বরাদ্দ আছে তারও বড় একটা অংশ অবকাঠামোগত উন্নয়নেই খরচ হয়ে যায়। আর কার্যত বাংলাদেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি, দুটিকে সমন্বিত করে শিক্ষাকে একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসতে হবে।’

রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, ‘শিক্ষা একটা রাজনৈতিক প্রকল্প তাই আমাদের শিক্ষানীতির পলিটিক্যাল এজেন্ডা নির্ধারণ করতে হবে। আমরা স্বাধীনতার ৫৪ বছরে একটা অভিন্ন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে পারি নাই। শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করা হয়েছে। যার যেমন আয়-ব্যয় সে সেরকম শিক্ষা পাচ্ছে। আমাদের এই পদ্ধতি বদলাতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ৫৪ বছরেও আমরা সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারি নাই। রাষ্ট্র সকলের শিক্ষার দায়িত্ব নিতে বারবার অস্বীকার করেছে। অভ্যুত্থানের পর আমরা আশা করেছিলাম শিক্ষা খাতে সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষা খাতে সংস্কারের কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। আমরা অবিলম্বে শিক্ষা খাতের প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য কমিশন গঠনের দাবি জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কারের মধ্য দিয়ে জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের উপযোগী একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করে তাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ (শিক্ষাখাতে স্বল্পমেয়াদে জিডিপির ৪ শতাংশ ও দীর্ঘমেয়াদে ৬ শতাংশ) বরাদ্দের দাবি জানাই। আমরা আজ যে খসড়া প্রস্তাবনা হাজির করেছি তার উপর রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের মতামত নিয়ে তা সম্পূর্ণ করে আমরা আগামী ২৭ মে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি আকারে তা প্রদান করবো এবং তা বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করবো।’

শিক্ষা সংলাপে আরো উপস্থিত ছিলেন বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতির সভাপতি ও গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক কুমার রায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আল-আমিনসহ নেতৃবৃন্দ।

(ঢাকাটাইমস/১৫মে/জেবি/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাবনায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ: মোটরসাইকেল ও অফিস ভাঙচুর, হাসপাতালে ভর্তি ৫
বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ 
ইশরাকের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইল স্থানীয় সরকার বিভাগ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা