ঢাকা টাইমসে সংবাদ প্রকাশের পর গাজীপুরের ঘুষ খাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঝুটের দাম কমিয়ে দেওয়ার কথা বলে ছয় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মহিদুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঢাকা টাইমসে সংবাদ প্রকাশের পর মঙ্গলবার তাকে ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহাম্মদ আবদুল মাবুদকে ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মহিদুলকে এরইমধ্যে রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
ছয় লাখ টাকা ঘুষ এবং ওই কর্মকর্তাকে স্বপদে রেখে তদন্ত কমিটি গঠন নিয়ে সোমবার ঢাকা টাইমসে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ‘‘গাজীপুরের কালিয়াকৈর/
ঘুষ নেওয়া পুলিশ পরিদর্শককে স্বপদে রেখেই তদন্ত, বহুমুখী প্রশ্ন” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের নজরে আসে। এরপরই পরিদর্শক মহিদুল ইসলামকে ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহাম্মদ আবদুল মাবুদ জানান, ঢাকা টাইমসে সংবাদ প্রকাশের পরই মহিদুলকে সেখান থেকে সরিয়ে রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানে নতুন একজন কর্মকর্তাকে পদায়ন করে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি অডিও রেকর্ড এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী কালিয়াকৈর পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি এ কে আজাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কালিয়াকৈরের সফিপুর নিশ্চিন্তপুর এলাকার লিভার্স টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড কারখানার ঝুট ব্যবসা পান এ কে আজাদের মেয়ের জামাই দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু অন্যান্য কারখানার চেয়ে ঝুটের দাম অনেক বেশি ধরেন ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ সুযোগে কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম ঝুটের দাম কমানোর কথা বলে ব্যবসায়ী দেলোয়ারের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নেন। কিন্তু টাকা পেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ ঝুটের দাম কমায়নি। পরে সেই টাকা ফেরত চাইলে গড়িমসিসহ শ্রমিকদলের নেতা এ কে আজাদ ও তার মেয়ের জামাইকে মামলা দেওয়া সহ নানানভাবে হয়রানির ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন।
ওই ব্যবসায়ী ও ওসির মুঠোফোনে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ঢাকা টাইমসের হাতে আসে। রেকর্ডের কথোপকথনে ওসিকে বলতে শোনা যায়, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ ঝুটের রেড কোড আমাকে দিলেও আমি কাউকে দিইনি। ওই ব্যবসায়ীকে তিনি বলছেন, টাকা-পয়সার বিষয়ে সাংবাদিকদের না বলে আজাদ ভাই আমাকে বললেই হতো। আপনিও আমার কাছে আসতে পারতেন।’
এ কে আজাদ বলেন, ‘আমাকে যেহেতু মামলাসহ নানানভাবে হয়রানির হুমকি দেওয়া হয়েছে সেহেতু তাকে সরিয়ে তদন্ত শুরু করা উচিত। কারণ, না হলে আমাকে ক্ষতি করতে পারে পুলিশের ওই কর্মকর্তা। এতে সঠিক তদন্ত নিয়ে সন্দীহান আমি।’
এবিষয়ে সোমবার ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহাম্মদ আবদুল মাবুদকে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি মাত্র আমি অবহিত হলাম। এবিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’
একইদিন পুলিশ কর্মকর্তাকে স্বপদে রেখে তদন্ত বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুর মোহাম্মদের কাছে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যেহেতু অভিযোগ গুরুতর, সেহেতু তাকে সরিয়ে তদন্ত শুরু করা উচিত। এতে ভুক্তভোগী মনে করবেন তদন্ত সঠিক হয়েছে।’
ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/এসএস/ইএস
মন্তব্য করুন