সৈয়দপুরে শীত ও কুয়াশায় খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ চরমে

নীলফামারীর সৈয়দপুরে কয়েকদিন ধরে শীত ও কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। সকালে কাজে যেতেও দেরি হচ্ছে কর্মজীবী মানুষদের।
উপজেলার কামারপুকুর, বোতলাগাড়ি, খাতামধুপুর, বাঙ্গালীপুর, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন ও সৈয়দপুর পৌর এলাকার শীতের তীব্রতা বাড়ায় গরিব, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষরাও পাচ্ছেন কষ্ট। অনেকে পুরোনো কাঁথা কিংবা চট গায়ে দিয়ে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডসহ ফুটপাতে ঘুমাচ্ছেন।
রাতে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ছিন্নমূল নারী-পুরুষ শীতের রাতে সামান্য একটু কাপড় গায়ে মুড়িয়ে শুয়ে আছেন। সেখানে কথা হয় বিধবা মর্জিনা খাতুন (৬৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘স্বামী নেই, অভাবের সংসার। সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে স্টেশনে থাকছি। এবার একটু বেশি ঠান্ডা পড়বে মনে হচ্ছে। এখনও কেউ গরম কাপড় দেয় নাই।’
সকালের ঠান্ডায় জবুথবু ভ্যানচালক খোকন (৫৭)। তিনি জানান, ‘পাঁচজনের সংসার তার। ঠান্ডা উপেক্ষা করে পাইকারি সবজি বাজার বাইপাস সড়কে এসেছি। এখান থেকে শাকসবজি নিয়ে বাজারে যাবো। সকাল সকাল বের হওয়ায় কুয়াশার কারণে ১০ ফুটও দেখা যাচ্ছে না। যে ঠান্ডা পড়ছে এতে আমাদের মতো গরিব মানুষদের খুবই কষ্ট হচ্ছে।’
কুয়াশায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামায়। গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশার কারণে সিডিউলে বিঘ্ন ঘটছে। একইভাবে সড়কে ও রেলপথে দিনের বেলায়ও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে।
এদিকে সৈয়দপুরে পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে বেচাকেনা। তবে এবছর দাম একটু বেশি বলে জানান ক্রেতা ও বিক্রেতারা। গরিব ও অসহায় মানুষের শীতের ভরসার স্থল ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকান।
সৈয়দপুর উপজেলার আল-ফারুক একাডেমীর শিক্ষক হাফেজ আব্দুল মুনতাকিম বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। এতে গরিব মানুষেরা খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এই অবস্থা চলমান থাকলে গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষের চরম ভোগান্তিতে ভুগতে হবে।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌরসভার প্রশাসক নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে সকালে কুয়াশা পড়ছে। শীতবস্ত্রের জন্য আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সরকারের পাশাপাশি একাজে বিত্তবান ও এনজিওদেরও এগিয়ে আসা উচিত।
(ঢাকাটাইমস/৯ডিসেম্বর/এমআই)

মন্তব্য করুন