কারাগারে ইমামের মৃত্যু, যা জানালো জিএমপি

গাজীপুরের হায়দরাবাদে ইমামকে গণপিটুনি দেওয়ার পর কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মহল ভুল তথ্যের ভিত্তিতে দেশব্যাপী অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, যা খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপকমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন। বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গীস্থ অপরাধ দক্ষিণ বিভাগে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় বলাৎকারের ঘটনায় গণপিটুনি দিয়ে রইজ উদ্দিনকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরে গাজীপুর জেলা কারাগারে আসামি অসুস্থ হলে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার বর্ণনা করে পুলিশ জানায়, গত ২৭ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টায় হায়দরাবাদ এলাকার স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে সংবাদ পাওয়া যায় যে, পূবাইল থানাধীন হায়দরাবাদ সাকিনস্থ আখলাছ জামে মসজিদের ইমাম রইজ উদ্দিন শিশু বলাৎকারের ঘটনায় গণপিটুনি দিয়ে আটক করে রেখেছেন। পূবাইল থানা পুলিশের টহলটিম দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পায় যে, শিশু বলাৎকারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রায় ২০০/৩০০ লোক ইমাম রইজ উদ্দিনকে মারধর করে আটক করে রেখেছ।
পুলিশের টহলটিম স্থানীয় লোকজনদের কাছ থেকে ইমাম রইজ উদ্দিনকে আহত অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে নিয়ে চিকিৎসার জন্য শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে যায়। রইজ উদ্দিনের চিকিৎসা শেষে পুলিশের টহলটিম ওইদিন দুপুর দেড়টায় পূবাইল থানায় নিয়ে আসে।
উক্ত মামলাটি তদন্তাধীন আছে এবং ঘটনা সংক্রান্তে স্থানীয় সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে অভিযোগের স্বপক্ষে সাক্ষ্য প্রমাণাদি ও আলামত জব্দ করা হয়েছে। রইজউদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির স্বীকার পাঁচ ভিকটিম নারী ও শিশু নির্যাতন (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর ২২ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে তাদের জবানবন্দি দিয়েছে। পরে মামলা হয়।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্মানিত আলেম সমাজের একাংশের কেউ কেউ ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের আবেগকে পুঁজি করে তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করার মানসে দেশব্যাপী অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, যা খুবই দুঃখজনক।
এ লক্ষ্যে তারা ইতোমধ্যেই লাশ নিয়ে থানা ঘেরাও, অবরোধ, বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ করে মিছিল ও প্রতিবাদ সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে চলেছেন। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় নানারকম অপপ্রচার ও উস্কানিমূলক গুজব প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি ও বিক্ষোভ তৈরি করছেন। যা স্বাভাবিক আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় অযাচিত হস্তক্ষেপ বলে প্রতীয়মান।সংবাদ সম্মেলনে জিএমপির অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের কর্মকর্তাগণ ও পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকা টাইমস/০১মে/এসএ)

মন্তব্য করুন