হরিণাকুণ্ডুতে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের, চান সহযোগিতা

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে শুরু হয়েছে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি শেষ হয়েছে সম্প্রতি। এখন জমিতে পুরোদমে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। বীজ থেকে উৎপাদিত চারা রোপণ করা হচ্ছে মাঠজুড়ে।
কৃষকরা তীব্র শীত আর ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর থেকে সারাদিন পেঁয়াজের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগে এসব এলাকায় এতো পেঁয়াজের আবাদ হতো না। কিন্ত এবছর দাম বেশি পাওয়ায় পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুড়িকাটা পেঁয়াজে এবার কৃষকরা আট-দশ গুণ বেশি লাভ পেয়েছেন। যে কারণে ক্ষেত থেকে তুলে ওই পেঁয়াজ বিক্রির পরপরই আবার হালি পেঁয়াজ রোপণের কাজ শুরু করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে এখন কেবল পেঁয়াজ রোপণের চিত্র। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ৩১৫হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হচ্ছে।
অভিযোগের সুরে কৃষকরা বলেন, এবছর তারা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পেঁয়াজ চাষের জন্য কোনো প্রণোদনা পাননি। পেঁয়াজ বীজের দাম অনেক বেশি। কৃষি অফিস থেকে এই বীজ সরবরাহ করা হলে কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হতেন বলে তারা মনে করেন। কৃষকরা বীজ, সারসহ পেঁয়াজ চাষে আর্থিক সহযোগিতা চান।
এবারও উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল লাল তীর কিং, রাণী ওয়ান, রাজশাহী কিংসহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ রোপণ করা হচ্ছে। পেঁয়াজের চারা রোপণের কারণে উপজেলায় শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষকরা অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে বাইরে থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করে দ্রুত পেঁয়াজ রোপণের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
প্রতিদিন ভোর থেকে পেঁয়াজের চারা উত্তোলনের পর জমিতে রোপণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকার বিনিময়ে শ্রমিকরা কাজ করছেন। তবে একযোগে কাজ শুরু হওয়ায় এবং শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকায় মজুরি একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের চারা রোপণের কাজ সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদ মোহাম্মদ তিতুমীর বলেন, ‘এ বছর আমাদের পেঁয়াজের বীজ বরাদ্দ কম থাকায় হাতেগোনা কিছু চাষিকে বীজ দিয়েছি। আগামীতে বরাদ্দ বেশি করে তাদের কাছে প্রণোদনা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, শীতকালীন পেঁয়াজ আবাদের মাধ্যমে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। গত মৌসুমের শেষ দিকে এসে পেঁয়াজের ভালো দাম পেয়েছেন চাষিরা। এছাড়া এবার পেঁয়াজ বীজের দাম গত মৌসুমের তুলনায় একটু বেশি। তারপরও পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন চাষিরা। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। দেশ বাঁচলে সাধারণ জনগণের মনে শন্তি ফিরে আসবে।’
(ঢাকাটাইমস/২৬ডিসেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন