মাঠজুড়ে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের মহোৎসব চলছে

নুরুল ইসলাম, সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর)
  প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:৫৪| আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২৫
অ- অ+

ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠজুড়ে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের মহোৎসব চলছে। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকদের প্রস্তুত করা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করছেন শ্রমিকরা।

এবার সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ আবাদের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদপ্তর।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সরেজমিনে সালথা-নগরকান্দার বিভিন্ন পেঁয়াজ খেতে গিয়ে দেখা যায়, প্রস্তুত করা জমিতে একজন শ্রমিক হাত লাঙল দিয়ে পিলি (বেড) কেটে দিচ্ছেন। আর শ্রমিকরা সারিবদ্ধভাবে বসে সেই বেডের মধ্য দিয়ে পেঁয়াজের চারাগুলো নিপুণ হাতে রোপণ করছেন।

অন্যদিকে গৃহস্থরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বীজতলার খেত থেকে পেঁয়াজের চারা তুলছেন। আবার কেউ কেউ খেতে পেঁয়াজের চারা রোপণ শেষ হওয়া মাত্রই শ্যালো-মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছেন।

সব মিলিয়ে সালথা-নগরকান্দার বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠজুড়ে পেঁয়াজ আবাদের মহাকর্মযজ্ঞ চলতে দেখা গেছে।

সালথার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের তরুণ পেঁয়াজচাষি মো. সাইফুল ইসলাম এবার পাঁচ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ আবাদের জন্য বীজতলায় বিভিন্ন জাতের ৯ কেজি বীজ বপন করেছি। ইতোমধ্যে বীজতলায় উৎপাদিত চারা রোপণের উপযোগী হয়েছে। আশা করি এই চারা দিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেও অন্তত ৩০ হাজার টাকার চারা বিক্রি করতে পাবর। দু-এক দিনের মধ্যেই পেঁয়াজ চারা রোপণের কাজ শুরু করব।’

এলাকার মাঠে মাঠে পেঁয়াজের চারা রোপণের উৎসব চলছে জানিয়ে কামদিয়া গ্রামের পেঁয়াজচাষি কায়েম ফকির বলেন, ‘কৃষক-শ্রমিকরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। আমরা কেউই এখন দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছি না। আমি এবার চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করি পেঁয়াজ ভালো হবে। তবে এবার শ্রমিক, সার-ওষুধ ও বীজের দাম বেশি। তাই খরচও বেড়ে গেছে দ্বিগুণ।’

একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হয়। তাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সার-ওষুধের দামও বেড়েছে। বলছিলেন সায়েম মোল্যা নামে আরেক পেঁয়াজচাষি। এক বস্তা সার ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে ভালো এক কেজি পেঁয়াজ বীজ কিনতে ১৮ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা লেগেছে। সব মিলিয়ে এবার এক বিঘা জমিতে ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যাবে।’ পেঁয়াজের ভালো দাম না পেলে লোকসানের আশঙ্কাও আছে বলে জানান তিনি।

প্রতি বছরের মতো এবারও নগরকান্দায় বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আবাদ করা হচ্ছে বলে জানান নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলোক কুমার ঘোষ। পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো যাতে হয় সেজন্য তারা কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, ‘সালথায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে এবার পেঁয়াজ আবাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে আমাদের অফিসের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।’

(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিরাপদ স্থান ছাড়াই চার লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আবারও বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
শোবিজ তারকারা ব্যাট-বল নিয়ে আবারও মাঠে নামছেন  
এপ্রিলে রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিকে জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি অপতথ্য প্রচার
গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৩১ জন নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা