অর্জিত বিজয় অর্থবহ করতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী-বাকশালীরা ক্ষমতায় থাকার জন্য জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দুই হাজার মানুষকে হত্যা করে দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। তাদের বিদায়টাও সম্মানজনক হয়নি। তাই অর্জিত বিজয় অর্থবহ করতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে মিরপুর পূর্ব থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সুধী সমাবেশ ও আত্মকর্মসংস্থান সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এ সময় থানা আমির শাহ আলম তুহিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ওয়াহিদুল ইসলাম সাদীর পরিচালায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা ও সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল না। তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে গদিতে থাকার জন্য যা ইচ্ছা তাই করেছে। তাই তাদের বিদায়টাও সম্মানজনক হয়নি। ইতিহাস এমন লজ্জাজনক বিদায় কারোরই হয়নি। যারা এভাবে একবার বিদায় নিয়েছে তাদেরকে ইতিহাসের আস্তাকূঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার আবারো ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। বিভিন্নভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের দাবি ছিল যৌক্তিক। কিন্তু তারা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে সমাধান করতে চায়নি বরং রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার করে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে। মূলত তারা ছোট একটি দাবিকে উপেক্ষা করতেই হাজার হাজার মানুষ খুন করে নির্মমতার পরিচয় দিয়েছে। তারা শুধু আবু সাঈদ বা মুগ্ধের মতো ছাত্রদের নয় বরং সব শ্রেণি ও মানুষের ওপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়েছে। তাদের থেকে রেহাই পায়নি নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও। তাদের জন্য মায়ের কোলের সন্তানও নিরাপদ ছিল না। এরপরও ফ্যাসিবাদীরা ক্ষমতার দিবাস্বপ্নে বিভোর। জনগণ তাদেরকে সে সুযোগ কখনো দেবে না। যেকোনো মূল্যে দেশে ফ্যাসিবাদী অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেবে দেশের জনগণ।’
‘আওয়ামী দুঃশাসনে রাষ্ট্রের সব সেক্টর ধ্বংস করা হয়েছে। তারা ব্যাংক-বীমাসহ অর্থনৈতিক সব প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। মূলত, তারা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনের কথা বলে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করে নিয়েছেন। জনগণ তাদের এমন দুঃশাসনে আর ফিরতে চায় না।’
যারা অতীতে ক্ষমতায় ছিলেন তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আমিরে জামায়াত বলেন, ‘নিজেদের অতীতের দিকে তাকান। ভালো কাজ করলে জনগণ আপনাদেরকে আবারো বেছে নেবেন। অন্যথায় প্রত্যাখ্যান করবেন। তিনি জনগণের আস্থা নিয়ে রাজনীতিবিদদের রাজনীতি করার আহ্বান জানান। তাহলে জনগণ আপনাদেরকে সাদরে গ্রহণ করবেন।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘মিরপুরের এই মাটিতে শহীদ মীর কাসেম আলী ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত ইনসাফ ও কল্যাণমূলক সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখতেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে তাকে বিচারে নামে অবিচার করে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। এই বিচার বাংলার মাটিতে হবে, ইনশাআল্লাহ।’
এ সময় সমাবেশ শেষে প্রধান অতিথি ডা. শফিকুর রহমান আত্মকর্মসংস্থানের সামগ্রী বিতরণ করেন।
ঢাকাটাইমস/০৬জানুয়ারি/জেবি/ইএস

মন্তব্য করুন