ফুসফুস ও লিভারের বন্ধু খেজুরের গুড়, সর্দি-কাশিরও যম
শীতকালে খেজুরের গুড়ের পিঠা-পায়েস না হলে যেন জমেই না। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা ও পায়েস। শীতকালে গুড়ের স্বাদ বাঙালির কাছে মধুর সমান। জানেন কি, এই খেজুরের গুড় কিন্তু শারীরিক নানা জটিল সমস্যার মহৌষধ।
বিশেষ করে যারা অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়ায় ভোগেন- তাদের জন্য খেজুরের গুড় আদর্শ। গুড় খেলে খাবার হজম হয় নিমেষে। গুড় কোষ্ঠকাঠিন্যও সারায় দ্রুত। আরও যে কত উপকার করে, তার অন্ত নেই। চলুত তবে দেরি না করে খেজুরের গুড়ের কিছু চমকে দেওয়া গুণ সম্পর্কে জেনে নিই।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়
রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকলে প্রেসার এমনিতেই নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেই কাজটাই করে খেজুরের গুড়। তাই এক টুকরো গুড় উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য খুবই ভালো। কারণ, গুড় রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
খাবার হজম হয় দ্রুত
শেষপাতে গুড় মানেই দ্রুত হজম। শীতে অম্বল, বদহজম, গ্যাস থেকে মুক্তি পেতে চাইলে প্রতিদিন এক টুকরো গুড় মাস্ট।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে
কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও সাহায্য করে গুড়। ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি পারগেটিভের কাজ করে।
লিভার সুস্থ রাখে
লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে খেজুরের গুড়। এর মধ্যে থাকা জিঙ্ক আর সেলেনিয়াম রক্তও পরিশ্রুত করে। তাই আয়ুর্বেদে গুড় দিয়ে কাঁচা হলুদ সকালে খালিপেটে খাওয়ার কথা বলা আছে।
ঠান্ডা কমাতে
সর্দি-কাশি-জ্বর কমাতে সিদ্ধহস্ত খেজুরের গুড়। হালকা গরম পানিতে এক চা-চামচ খেজুরের গুড় মিশিয়ে খেলে সর্দি কমে ঝটপট।
ফুসফুস পরিষ্কার করে
ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে খেজুরের গুড়। যারা অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়ায় ভোগেন তাদের জন্য গুড় আদর্শ।
রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়
গুড়ে থাকা আয়রন, জিঙ্ক, সেলেনিাম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস একযোগে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন গুড় খান। অ্যানিমিয়া কমে হিমোগ্লোবিন বাড়বে ওষুধ ছাড়াই। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে গুড় খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতিও কমতে পারে।
বাতের ব্যাথা দূর করতে
শীতে বাতের ব্যথা বাড়ে। সাদা তিলের নাড়ু বানাতে পারেন গুড় দিয়ে। অল্প ঘি মাখিয়ে প্রতিদিন খেলে ব্যথা অনেকটাই কমবে।
ঋতুস্রাবের ব্যথা কমায়
ঋতুস্রাবের ব্যথা কমাতে তিল বীজের সঙ্গে এক চা-চামচ গুড় মিশিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন।
শরীরে হরমোনের সমতা বজায় রাখে
প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম বা পিএমএস সমস্যায় কমবেশি প্রায় সব মহিলারা ভোগেন। প্রতিদিন নিয়ম করে অল্প পরিমাণ গুড় খেলে শরীরে হরমোনের সমতা বজায় থাকে। এছাড়া গুড় আমাদের শরীরে হ্যাপি হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায় ও হরমোনের সমতা বজায় রাখে।
গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে
আমাদের শরীরে কার্বোহাইডেড জাতীয় খাবার অথাৎ চিনি এনার্জি প্রদান করে। কিন্তু এই এনার্জি অনেক সময় আমাদের শরীরে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে কিডনি, চোখ ও রক্তের চাপ বাড়িয়ে দেয়। গুড় খেলে এই সমস্যাটি কম হতে পারে।
কারণ গুড় রক্তের সঙ্গে মিশতে কিছুটা সময় লাগে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ করে বেশি কমে বা বেড়ে যেতে পারে না। ফলে আমাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলোর ক্ষতি কম হয়।
সাবধানতা
ডায়াবেটিসের রোগী ভুলেও গুড় খাবেন না। এতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট থকে। তাই বেশি পরিমাণে খেলে ওবেসিটি বাড়বে।
(ঢাকাটাইমস/৭জানুয়ারি/এজে)
মন্তব্য করুন