রোজায় নিরাপদে ইবাদত বন্দেগির জন্য ডিবির কার্যক্রম বেগবান করা হয়েছে: রেজাউল করিম

পবিত্র রমজান মাসে রাজধানীর মানুষের নিরাপত্তা দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ‘ক্লান্তহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক।
তিনি বলেন, “রমজানে নগরবাসী যেন নিরাপদে ইবাদত বন্দেগি করতে পারে সেজন্য ডিবির কার্যক্রম আরও বেগবান করা হয়েছে।”
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে 'পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ডিবির পরিকল্পিত কার্যক্রম’ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, “আজ থেকে আমরা ডিবির চলমান কার্যক্রমের পাশাপাশি রমজান সামনে রেখে বিশেষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছি। এটা হচ্ছে এক ধরনের বিশেষ গোয়েন্দা অভিযান। এই অভিযানে ছদ্মবেশে আমাদের সদস্যরা মানুষের মধ্য থেকে অপরাধীদের শনাক্ত করবে।”
তিনি বলেন, “রোজার সময় মানুষের কর্মব্যস্ততা বাড়ে বিশেষ করে টাকা-পয়সার লেনদেন বেশি হয়। শপিংমল, ব্যাংক, বিমাগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়ে। রেল স্টেশন বাস টার্মিনালে কিংবা সদরঘাটের মতো জায়গায় মানুষের উপস্থিতি বাড়ে। এসব জায়গায় কেউ যাতে নাশকতা না করতে পারে, সেজন্য আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ মাসকে কেন্দ্র করে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য গোয়েন্দা তাৎপরতার মাধ্যমে আমরা আগে থেকেই ডিবির তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছি।”
এসময় ডিবিপ্রধান বলেন, “আমাদের গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে, চুরি ছিনতাই ডাকাতির সঙ্গে যারা যুক্ত হচ্ছে তাদের বেশিরভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। এদের মধ্যে অনেকেই কিশোর গ্যাং। তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে, আবার কিছু পতিত রাজনৈতিক শক্তি তাদের ইন্ধন দিয়ে অপরাধ কার্যক্রমে জড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনীর কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি তাদের বিরুদ্ধে আমরা অলআউট অ্যাকশনে যাচ্ছি।”
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, “মহানগরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। আমাদের কাজ হচ্ছে গোয়েন্দা নজরদারি শক্তিশালী করা, আমরা এটিকে গুরুত্ব দিচ্ছি।”
‘কিছুদিনের মধ্যে আরও ভালো অবস্থা দেখা যাবে’ বলে জানান তিনি।
এ সময় সকলকে তথ্য দেওয়ার সহায়তা করার অনুরোধ জানান ডিবিপ্রধান। বলেন, “জনসাধারণের প্রতি আমাদের আহ্বান ডিবি পরিচয়ে কেউ গোপনে তুলে নেওয়া বা সিভিল পোশাকে কেউ তল্লাশির মতো কার্যক্রম করলে আমাদেরকে অবহিত করবেন।”
পাশাপাশি নাশকতা করতে পারে- এমন কোনো তথ্য থাকলে ডিবিডিবিকে তথ্য দিতে আহ্বান জানান রেজাউল করিম। তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, “এ দেশ আপনার আমার সকলের। দেশে শান্তি থাকলে শান্তি থাকবে জনমনে।”
দেশকে নিরাপদে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত থেকে শুরু করে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এরই অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিনতাইকারী, ডাকাত ও অভ্যাসগত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।”
ডিবিপ্রধান বলেন, “ছোট অপরাধ বড় অপরাধের জন্ম দেয়। তাই সব ধরনের অপরাধে আমরা নিয়েছি জিরো টলারেন্স নীতি। চুরি ছিনতাই ও ডাকাতি রোধে ডিবির নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সমাজকে মাদকের থাবা থেকে দূরে রাখতে ডিবি প্রতিনিয়ত মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী হোক বা যে কোনো অপরাধী হোক, ডিবির জালে তাদের ধরা পড়তেই হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে এদেরকে আমরা বিন্দুমাত্র ছাড় দিব না।”
তিনি বলেন, “মাহে রমজানে নগরবাসী যাতে নিরাপদে ইবাদত বন্দেগি করতে পারে এজন্য ডিবির কার্যক্রম আরও বেগবান করা হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, নগরবাসী এ সময় অধিকতর নিরাপদ স্বস্তির পরিবেশে থাকবে।”
এ সময় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, (সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) সৈয়দ হারুন অর রশীদ ও উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/১মার্চ/এলএম/এফএ)

মন্তব্য করুন