দেশজুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যেই শ্রীপুরে আরেক শিশু ধর্ষিত, ভিডিও ধারণ

মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর মধ্যেই গাজীপুরের শ্রীপুরে আট বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া শিশুকে গভীর শালবনে নিয়ে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরমান মিয়া নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে শালবনের ভেতর থেকে ধরে এনে তাকে গণধোলাই দেয় জনতা।
অভিযুক্ত আরমান ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের শামসুল হকের ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দরগারচালা গ্রামের মাঝেরটেক এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী শিশু একই এলাকার একটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
স্থানীয় একজন বলেন, “শনিবার দুপুরের পর থেকে শিশুটিকে খোঁজাখুঁজি করছিলেন তার মা-বাবা। বিষয়টি আমরা জানতে পেরে আশপাশে খোঁজ করতে থাকি। একপর্যায়ে গভীর শালবনের ভেতর শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। এরপর বনের ভেতর গিয়ে শিশুসহ আরমানকে দেখতে পাই। এরপর শিশুর কাছে বিস্তারিত জেনে আরমানের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে আপত্তিকর ভিডিও পাওয়া যায়, যা সে কয়েকজনকে পাঠিয়েছিল। এরপর স্থানীয়রা এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে অভিযুক্তকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন।”
আরমান ক্ষুব্ধ জনতাকে বলেন, “শিশুকে ধর্ষণের পর আমি নিজেই ভিডিও ধারণ করেছি। আমার কয়েকজন বন্ধুর ইমুতে ওই আপত্তিকর ভিডিও পাঠিয়েছি। আমাকে কয়েকজন মিলে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করিয়েছে। এজন্য আমার মাথা ঠিক ছিল না।”
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আকতার বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্তকে। মোবাইল ফোনে ধারণ করা কয়েকটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে মোবাইল ফোনও।”
গত বুধবার রাতে মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয় আট বছরের এক শিশু। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে আনা হয় ঢামেক হাসপাতালে। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে চলছে তার শ্বাস-প্রশ্বাস। গতকাল শনিবার সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছে বিকেলে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)।
এদিকে এ ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে। শনিবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ শীর্ষক প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা। প্ল্যাটফর্ম থেকে দুটি দাবি জানিয়েছেন তারা। তা হলো— বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিগত সময়ের সব ধর্ষককে বিচারের আওতায় আনা এবং মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকদের ফাঁসি কার্যকর করা। এই দুটি দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত মঞ্চ থেকে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এছাড়া গতকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
(ঢাকাটাইমস/০৯মার্চ/এফএ)

মন্তব্য করুন