শ্রীপুরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে কৃষকের কবজি বিচ্ছিন্ন

গাজীপুরের শ্রীপুরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হযরত আলী নামে এক কৃষকের বাম হাতে কবজি বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আরো চারজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের তাঁতি সুতা (দক্ষিণ পাড়া) গ্রামের শেখবাড়ি সংলগ্ন এ ঘটনা ঘটে।
কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়া কৃষকের নাম হযরত আলী। সে তাঁতি সুতা (দক্ষিণ পাড়া) গ্রামের মৃত হাবিজ উদ্দিনের ছেলে । তাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাকি আহতরা হলেন— একই গ্রামের মৃত রাম দুলাল বিশ্বাসের ছেলে পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস (৫২), তার বড় ভাই অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস (৬২) ও তার মেয়ে কলেজ শিক্ষার্থী সঙ্গীতা বিশ্বাস (১৭)। তাদেরকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় কর্মরত।
হযরত আলীর ভাতিজা শাকিল আহমেদ সবুজ জানান, দীর্ঘদিন ধরে বন বিভাগের জমি তার জেঠা ভোগ দখল করে চাষাবাদ করে আসছেন। ওই জমি নিয়ে বন বিভাগের সঙ্গে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। প্রতিপক্ষ অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস গং ওই জমি তাদের বলে দাবি করে আসছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস এবং তার ভাই পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস বিরোধপূর্ণ জমিতে চাষ করতে যান। এ সময় কৃষক হযরত আলী তাদেরকে জমি চাষ করতে বাধা দেন। বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাসের হাতে থাকা দা দিয়ে হযরত আলীর বাম হাতের কব্জি কোপ দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাসের বড় ভাই প্রফুল্ল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমার ছোট ভাই অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস জমিতে চাষ করতে যায়। এ সময় কৃষক হযরত আলী ও তার স্বজনেরা আমার ভাইকে মারধর করে। তার চিৎকার শুনে ছোট ভাই পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস ও ভাতিজি সঙ্গীতা বিশ্বাস ঘটনাস্থলে যায়। এক পর্যায়ে কৃষক হযরত আলী তাদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। তাদেরকে মুমূর্ষু অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইদেরকে ফাঁসানোর জন্য হযরত আলী লোকজন তার বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে আমাদের বিরুদ্ধে বলছে।
শ্রীপুর রেঞ্জের শ্রীপুর সদর বিট কর্মকর্তা আলাল উদ্দীন জানান, তাঁতি সুতার ওই জায়গা বন বিভাগের। অনেক আগে থেকেই ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। বন বিভাগ গত বছর কিছু গাছের চারা রোপণ করেছে। চলতি বছরেও চারা রোপণ করবো। এটা বন বিভাগের জায়গা, এ জায়গা নিয়ে মারামারির কিছু নেই।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস এ থানায় পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। তিনি মঙ্গলবার সকালে ডাক নিয়ে রেঞ্জ অফিসে গিয়েছে। কিন্তু তিনি বাড়িতে গেছে কি না আমার জানা নেই।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুদেব চক্রবর্তী বলেন, হযরত আলী নামে একজন বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ওসি (অপারেশন) নয়ন কর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। আমিসহ সার্কেল এএসপিও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কোনো পক্ষই এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়নি।
(ঢাকা টাইমস/১৩মে/এসএ)

মন্তব্য করুন