১৪ দিনে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৫৬২ জন গ্রেপ্তার: কর্নেল শফিকুল ইসলাম

গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাতসহ অন্যান্য অপরাধী রয়েছে। এ পর্যন্ত সেনাবাহিনী ১৫ হাজার ৬৪৬ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেফতার ও অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ৯৯০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ সময়ে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫৬২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ৬৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী।
কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬৯২টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫৬২ জনকে এবং এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৬৪৬ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাতসহ অন্যান্য অপরাধী রয়েছেন।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী ২১ জুন খুলনার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বুলবুলকে তার চারজন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে। অভিযানে একটি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় পিস্তল, একটি শটগান এবং ২ রাউন্ড অ্যামোনিশন উদ্ধার করা হয়। সন্ত্রাসী বুলবুল ‘বুলবুল গ্রুপ’ নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতা।
গত ২৯-৩০ জুন মীর হাজিরবাগ আল আমীন সন্ত্রাসী গ্রুপের দুজন সক্রিয় সদস্য আনিছ ও হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ অভিযানে তিনটি বিদেশি পিস্তল, একটি বিদেশি রিভলভার, তিনটি ম্যাগাজিন ও ১১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে গত দুই সপ্তাহে ৪৫ জন মাদক ব্যবসায়ী এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫ হাজার ৫২১ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী মাদকের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে সফল অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়াও গত ১৭ জুন টঙ্গি মাজার বস্তি এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ২৪ জন ও গত ২৬ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভিযান পরিচালনা করে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান কর্নেল শফিকুল ইসলাম।
গুমের সঙ্গে সেনা সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল বলেন, 'বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত সেনা সদস্যরা সরাসরি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকেন না। তবুও যদি কারও বিরুদ্ধে গুমের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।'
ভুক্তভোগী পরিবারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে সহযোগিতা চান, তাহলে আমরা যথাযথভাবে সহযোগিতা করব।’

মন্তব্য করুন