পাকিস্তানে গাড়িবহরে বন্দুকধারীদের হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ৪১
পাকিস্তানের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল দিয়ে ভ্রমণকারী ২০০ যাত্রীবাহী গাড়ির একটি কনভয়ে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছে।
ওই এলাকার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, আফগান সীমান্তের কাছে পাকিস্তানের কুররামের উপজাতীয় জেলার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িগুলো হামলার শিকার হয়। খবর বিবিসির।
প্রাদেশিক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, বন্দুকধারীরা প্রথমে কনভয়ের পুলিশ এসকর্টকে লক্ষ্যবস্তু করে।
এই এলাকায় কয়েক মাস ধরে চলা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরে কনভয়কে নিরাপত্তা দিচ্ছিল পুলিশ। এই বছর সহিংসতায় কয়েক ডজন প্রাণ দিয়েছে।
পুলিশ বিবিসিকে বলেছে, বৃহস্পতিবারের হামলায় ৪১ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১৬ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্য সচিব নাদিম আসলাম চৌধুরী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “হামলাটি একটি বড় ট্র্যাজেডি এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।”
কনভয়ের মাঝখানে থাকা সাঈদা বানো বিবিসি উর্দুকে বর্ণনা করে বলেছেন, আক্রমণের সময় তিনি তার বাচ্চাদের সঙ্গে গাড়ির সিটের নিচে লুকিয়ে ছিলেন। তাকে হত্যা করা হবে বলে আশঙ্কা করেছিলেন তিনি।
অবশেষে কয়েক মিনিট পর গুলি থামলে তিনি রাস্তায় আহত মানুষ ও লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
ঠিক কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত বিবরণ এখনও উঠে আসছে। তবে প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জাভেদ উল্লাহ মেহসুদ এএফপিকে বলেছেন , “হামলায় প্রায় ১০ জন জড়িত ছিল, রাস্তার দুপাশ থেকে নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল।”
পুলিশ যখন হামলাকারীদের খুঁজছিল, তখন নারী ও শিশুরা আশপাশের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল, তিনি যোগ করেন।
আগের এক বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের মধ্য দিয়ে কনভয়ে যাতায়াতকারী বেশিরভাগ যাত্রীই শিয়া ছিলেন।”
এ বছর সুন্নি ও শিয়া মুসলিম উপজাতির মধ্যে বারবার সংঘর্ষ হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, একটি উপজাতীয় পরিষদ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর পর আক্রমণের একটি আগের সিরিজ শেষ হয়েছে। তারপর গত মাসে এই অঞ্চলে একটি রাস্তার পাশে যাত্রীবাহী যানবাহনে আরেকটি হামলা হয়, যাতে ১৫ জন নিহত হয়।
বৃহস্পতিবারের কনভয় যে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছিল তা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আবার খোলা হয়েছে। যাতায়াতে কনভয়ের মধ্যে পুলিশ সুরক্ষা ছিল।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রায়ই এই অঞ্চলে জমি বিরোধের সঙ্গে যুক্ত।
কুররাম পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি আফগান প্রদেশের সীমান্ত রয়েছে, যেখানে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ এবং তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)সহ শিয়াবিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীর আবাসস্থল।
(ঢাকাটাইমস/২২নভেম্বর/এফএ)
মন্তব্য করুন