হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত ইসরায়েল
লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে সম্মত হয়েছে দখলদার ইসরায়েল। আগামী দুই দিনের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া।
সোমবার ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টার কেএএন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লেবাননের সঙ্গে মার্কিন সমর্থিত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের বৈশ্বিক অবকাঠামো ও জ্বালানি নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষ দূত আমোস হোচস্টেইনকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন তিনি। চুক্তিটি দুই দিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিষয়টির সঙ্গে সুপরিচিত সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি আরও বলেছে, তেল আবিব ওয়াশিংনটনের কাছ থেকে গ্যারান্টি পেয়েছে যে, ‘হিজবুল্লাহ যদি যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে, তবে আবারও সামরিক কার্যক্রম চালাতে পারবে ইসরায়েল।’
ইসরায়েলি সূত্রগুলো দাবি করেছে, লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়া ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে এবং নেতানিয়াহু এখন এটি কীভাবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করবেন তা নিয়ে কাজ করছেন।
কেএএনর প্রতিবেদনে হিজবুল্লাহ বা লেবাননের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহ প্রধান শেখ নাইম কাসেম বলেছেন, গোষ্ঠীটি মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিষয়ে তাদের মতামত জমা দিয়েছে। তবে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর স্বদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে বলেও জোর দিয়েছেন তিনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি কার্যক্রমের মধ্যে গত এক সপ্তাহ ধরে লেবাননের রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া অব্যাহত রেখেছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পরদিন থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রায় প্রতিদিন রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সীমান্ত থেকে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও (আইডিএফ)।
এদিকে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে লেবাননে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল আর গত ১ অক্টোবর থেকে দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী, যা মধ্যপ্রাচ্য একটি আঞ্চলিক সংঘাতকে প্রসারিত করেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৫ হাজারের বেশি আহত এবং ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, সংঘাতের ফলে লেবাননের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে পাঁচ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তবে কাঠামোগত ক্ষতি কয়েক বিলিয়ন ডলার।
সূত্র: আনাদোলু, টাইমস অব ইসরায়েল
(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/এমআর)
মন্তব্য করুন