ঈদের আগে বিকাশে লেনদেনে অতিরিক্ত কমিশন

মোসাদ্দেক বশির, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০১৭, ১৬:৩৬
ফাইল ছবি

ঈদের আগে আগে পরিবহন ভাড়ার সাথে সাথে বেড়ে গেছে মোবাইল ফোনে টাকা পাঠানোর খরচও। দোকানে দোকানে নির্ধারিত কমিশনের চেয়ে বেশি আদায় করছেন ব্যবসায়ীরা। আর ক্ষুব্ধ মনে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন গ্রাহকরা।

ঈদের তিন দিনের সঙ্গে দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি-সব মিলিয়ে পাঁচ দিন বন্ধ ব্যাংক। এই অবস্থায় দূরে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভরসা মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ। এর পরেই রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংকের রকেট।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিকাশের এজেন্টরা টাকা লেনদেনে শতকরা দুই শতাংশের বদলে আড়াই বা তিন শতাংশ হাতে কমিশন দিতে বাধ্য করছেন গ্রাহকদেরকে। একেকজন গ্রাহক প্রতি হাজারে পাঁচ বা ১০ টাকা বেশি দিচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক গ্রাহক লেনদেন করে বলে ব্যবসায়ীরা অবৈধ আয় করছেন বিপুল পরিমাণে।

টাকা পাঠাতে আসা লোকজন বলছেন, ঈদ বোনাস ও ব্যালেন্সে টাকা না থাকার অজুহাতে প্রতি হাজার টাকায় ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা নেয়া হচ্ছে।

বেশি টাকা দিলেই ব্যালেন্সে কীভাবে টাকা চলে আসছে তার কোনো ব্যাখ্যা দিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। আর ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো নজরদারি দেখা যায়নি।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে মগবাজারের একটি বিকাশ পয়েন্টের কর্ণধার ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘ঈদ উপলক্ষে ব্যাংকের সার্ভিস আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের ব্যালেন্সেও টাকা নেই। তাই প্রতি হাজারে পাঁচ টাকা করে বেশি নিচ্ছি।’

ব্যালেন্স না থাকলে কীভাবে টাকা পাঠাচ্ছেন-জানতে চাইলে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘বেশি টাকা দিয়ে ব্যালেন্স আনতে হয় আমাদের।’

পাবনায় পরিবারের কাছে টাকা পাঠানো জন্য মগবাজার মোড়ে আদিব টেলিকমের বিকাশ কেন্দ্রে এসেছেন মালেক। ১০ হাজার টাকা পাঠানোয় তাকে খরচ দিতে হলো ২৫০ টাকা। অথচ বিকাশের ফি হলো প্রতি হাজারে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা করে ১৮৫ টাকা। কিন্তু মালেককে বেশি দিতে হলো ৬৫ টাকা।

মালেক বলেন, ‘বেশ কয়েকটি বিকাশ দোকান ঘুরে কোথাও থেকে টাকা পাঠাতে পারলাম না। এখানে থেকে পাঠালাম। তবে বেশি টাকা দিতে হলো। কাল ঈদ, পরিবারের কাছে টাকা পাঠানো জরুরি ছিল। তাই বেশি টাকা খরচ করেই টাকা পাঠালাম।’

ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় একজন বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে খরচ ছাড়া রংপুরে পাঁচ হাজার টাকা পাঠালে তিনি ২৫ টাকা দাবি করেন। কিন্তু খরচ ছাড়া টাকা পাঠালে কেন এই কমিশন দিতে হবে-জানতে চাইলে ওই এজেন্ট বলেন, ‘এই টাকা আনতে অনেক কষ্ট হইছে। ৫০০ টাকা বোনাস দিয়ে টাকা আনতে হইছে। এই টাকা কাস্টমার থাইক্যা তুলছি।’

বিকাশের ওয়েবসাইটে দেয়া হেল্প লাইন ১৬২৪৭ নম্বরটিতে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে জানানো হয়, অতিরিক্ত টাকা কাটার কোনো সুযোগ নেই। টাকা পাঠালে এজেন্টদের প্রতি হাজারে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা করে নেয়ার কথা। এর বেশি নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

কিন্তু ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় তো বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে। এক প্রতিকার কে করবে-জানতে চাইলে বিকাশের হেল্পলাইনের ওই কর্মী বলেন, ‘কেউ বেশি টাকা চাইলে তার নাম্বার দিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করতে হবে। তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে হেল্পলাইনের ওই কর্মী বলেন, বিকাশ এজেন্টদের নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি টাকা আদায়ের বিষয়ে তাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি।

ঢাকাটাইমস/২৫জুন/এমএবি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :