মৌসুমের রেকর্ড বৃষ্টিতে জলমগ্ন ঢাকা

মোসাদ্দেক বশির, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০১৭, ১০:২৫| আপডেট : ১২ জুলাই ২০১৭, ১৬:১৭
অ- অ+

আষাঢ়ের শেষ সময়ে ঢাকায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। সারাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকন্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে বুধবার ভোর ছয়টা বৃষ্টি হয়েছে ৬০ মিলিমিটার। চলতি বর্ষা মৌসুমে এক দিনে রাজধানীতে এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এর আগে অবশ্য গ্রীষ্মের প্রথম মাস বৈশাখে ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। সেটা ছিল গ্রীষ্মের বৃষ্টিপাতের ৩৫ বছরের রেকর্ড।

মুষলধারে বৃষ্টির কারণে রাজধানীর অনেক এলাকায় জলবদ্ধাতা তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো রাস্তায় হাঁটু থেকে কোমর পানি জমেছে।

ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী, মৌচাক,মালিবাগ, মগবাজার, মিরপুর, কাজীপাড়া, কাওরানবাজার, নাখালপাড়া, পল্টন, মতিঝিল, শান্তিনগর, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, রাজারবাগ, বনানী, মুগদা, বাসাবো, রামপুরা, বাড্ডা, খিলগাঁও, মালিবাগ, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে।

রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এলাকা শনিরআখড়া, কদমতলী ও রায়েরবাগের বিভিন্ন বাসায় পানি উঠে গেছে। এসব এলাকার নিচতলায় যারা থাকতেন তারা অনেকে বাসা ছেড়ে দিয়েছেন।

দুই দিন ধরে ডুবে আছে তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া এলাকা। ময়লা পানি ঢুকে পড়েছে ওই এলাকার টিনের ঘরগুলোতে। গত এক মাস ধরে পানিতে ডুবে আছে খিলক্ষেতের একটি বড় অংশ।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বা ওয়াসার প্রকাশ্য তেমন কোনো তৎপরতাও নেই এই জলাবদ্ধতা দূরীকরণে। সংস্থা দুটির একাধিক কর্মী ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, এই সমস্যা সমাধানে একাধিক দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পের কাজ চলছে। এগুলো শেষ না হলে সমাধান হওয়া কঠিন।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিম এ খান বলেছেন, চার পাশে বাঁধ দেয়ার কারণে ঢাকা একটি বালতির মত হয়ে গেছে। বর্ষায় নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নামতে পারছে না। এই অবস্থায় সেচে পানি নদীতে ফেলতে হচ্ছে।

এ ছাড়াও রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত রাস্তার দুই প্রান্তে ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এই প্রকল্প শেষ হলে খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ, বিমানবন্দরের আশেপাশের এলাকা, বসুন্ধরা, বনানী ডিওএইচএস, সেনানিবাস এলাকার জলাবদ্ধতা অনেকটাই দূর হবে বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের রেকর্ড। এছাড়া মাদারীপুরে ৭০ মিলিমিটার, কক্সবাজারে ৬৪ মিলিমিটার এবং শ্রীমঙ্গলে ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।’

বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজশাহীতে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে বৃষ্টি হয়েছে ৩০ মিলিমিটার। এ ছাড়া ময়মনসিংহে ২৮, সিলেটে ১৯, চট্টগ্রামে ৫, খুলনায় ৬, বরিশালে ৬ ও রংপুরে ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস জানান, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এভাবে বৃষ্টিপাত হবে।

অধিদপ্তরের আবহাওয়ার পর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গপোসাগরে মাঝারী অস্থায় রয়েছে। এ কারণে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দম্কা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এমএবি/ডব্লিউবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যে কারণে দুই টুকরা ঢাকা সিটি করপোরেশন
দায় স্বীকার করে সাবেক সিইসি নুরুল হুদার জবানবন্দি
বিএনপির অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেয়া হলো সেই এহসান মাহমুদকে
অস্তিত্ব দিয়ে আগামীর বাংলাদেশে জুলাইকে ধারণ করব : মঞ্জু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা