নির্মাণের এক মাসেই দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কে ধস
দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক নির্মাণের এক মাস না হতেই ধসে পড়েছে বড় একটা অংশ। ধসের ঘটনায় খাদে পড়ে যায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক। এলাকার লোকজন আরো বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন।
সওজ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকায় সড়ক বিভাজকসহ প্রায় ২৮৫ মিটার পাকা সড়ক ও ড্রেনের নির্মাণকাজ শেষ হয় গত ৩০ জুন। দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কের প্রায় ১০০ মিটার ধসে গেছে গত সপ্তাহের বৃষ্টিতে।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) জানায়, ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব ব্লক স্পট’ নামের প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে সড়ক-মহসড়কে এ ধরনের কাজ চলছে। গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ২৮৫ মিটার দৈর্ঘের সড়ক বিভাজকসহ কার্পেটিং করে পাকা সড়ক নির্মাণ ও ড্রেনের কাজটি করে ঢাকার ‘মেসার্স রফিক কনস্ট্রাকশন’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে রাজবাড়ীর যুবলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান কাজের তদারক করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডের পর থেকে পদ্মার মোড় পর্যন্ত অংশে অন্তত চার-পাঁচটি স্থানে ধসে গেছে। এমনকি পানি নিষ্কাশনের ড্রেনসহ সড়ক ধসে খোয়া ও পাথর বের হয়ে গেছে। কিছু স্থানে প্রায় ২০-৩০ ফুট অংশ নিয়ে ধসে সড়কের পশ্চিম পাশে নেমে গেছে।
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ছবেদ আলীর বাড়ির সামনের অংশে গত সোমবার বিকেলে কলাবোঝাই একটি ট্রাকসহ সড়ক ধসে খাদে পড়ে যায়।
এ ছাড়া পদ্মার মোড় এলাকার অন্তত ৫০ মিটার অংশ জুড়ে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। আরও কিছু কিছু অংশ ধসে গেছে। সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শ্রমিককে বালুর বস্তা ফেলার প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়।
কর্তব্যরত শ্রমিক আমজাদ শেখ ও মোনছের হোসেন জানান, ভারী বৃষ্টির কারণে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে পদ্মার মোড় পর্যন্ত মহাসড়কের চার-পাঁচটি স্থানে ধসে গেছে। অতি বৃষ্টির পানি ভালোভাবে নিষ্কাশন হতে না পারায় এবং নতুন রাস্তা বলে বালু ধসে গেছে।
যদিও পানি বের হওয়ার জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়, কিন্তু কিছু কিছু স্থানে ড্রেনসহ ধসে গেছে। ১৭-১৮ জন শ্রমিক বালুভর্তি বস্তা ফেলে মহাসড়ক রক্ষার কাজ শুরু করছেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে এক মাসও হয়নি। অথচ এর মধ্যে পাকা কার্পেটিং করা সড়কসহ ড্রেনের বড় অংশ কয়েকটি স্থানে ধসে গেছে। নতুন সড়ক এখনই ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চিন্তিত তারা। সড়কের নাজুক পরিস্থিতির কারণে যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কার কথা জানান তারা।
ঠিকাদার কাজ বুঝিয়ে দিলেও এখনো তাদের শেষ হয়নি বলে জানান সড়ক ও জনপথ (সওজ) রাজবাড়ীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহরিয়ার রুমী। তিনি বলেন, ‘এ কারণে কোনো ধরনের ক্ষতির দায়ভার আমরা এখন বহন করব না। ভারী বৃষ্টির কারণে সড়কের কয়েকটি স্থান ধসে পড়ায় তা দ্রুত সংস্কার করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে তারা বালুভর্তি বস্তা ফেলাসহ অন্যান্য কাজ শুরু করেছে।
(ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/মোআ)