পাকিস্তানের ইস্যু গণমাধ্যমে ভুলভাবে এসেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট ২০১৭, ০০:১২

পাকিস্তান ইস্যুতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্য গণমাধ্যমে ভুলভাবে এসেছে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদৎ বার্ষিকী ও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৃহত্তর ফরিদপুর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী কল্যাণ সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, লাস্টের (প্রধান বিচারপতির কথা) কথা মিডিয়ায় এসেছে ভুলভাবে। সেদিন অধস্তন আদালতের বিচারকদের রুলস ফ্রেমের জন্য ছিল। আমরা অনেক সময় নিয়েছি। আমি আদালতকে বললাম, বাইরের অবস্থা অনেক উত্তপ্ত। লম্বা করে সময় দেন। উত্তাপ কমলে এর একটা সমাধান হবে। উনি (প্রধান বিচারপতি) বললেন, আমরা কী উত্তপ্ত করছি? আপনারাইতো উত্যপ্ত করছেন। পাকিস্তানে তো রায়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী চলে গেলেন। ওখানে তো কিছু হয় নাই।

তিনি বলেন, আমাকে নানা এজেন্সি থেকে ফোন দেয়া হচ্ছে। অনেক মিডিয়ায় এসেছে ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে ছুড়ে ফেলে দিতে পারবো।’ এটা ঠিক না।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর মামলাটি যখন শুরু হয়, অনেক জটিলতার মাধ্যমে আমাদের এগুতে হয়েছে। জজদের বডি ল্যাংগুজে বুঝে গেছি, তারা চান না বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে যাক।

ষোড়শ সংশোধনীর মামলা আমার তিনটি যুক্তি ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া হয়েছে। তখন তারা (জজ) বলতেন, চতুর্থ সংশোধনীতেতো তা বদলে ফেলা হয়েছে। সেটিতো এখন আর নেই। উনরা আমাকে এটা বলে টেকেল দেয়ার চেষ্টা করা করেছেন। আমি বলেছি, ষোড়শ সংশোধনীকে সংশোধনী বলা যাবে না। এটা শুধুমাত্র ৭২ সংবিধানের সঙ্গে কাটিং অ্যান্ড পেস্ট করা হয়েছে। রায়ে ওই ভাবে বলা আছে।

তিনি বলেন, জজদের মনে একটা জিনিস ঢুকেছে, সংসদ সদস্যরা আমাদের কেন বিচার করবে? আমি বলেছি, এই রায় এটা ইতিহাসের ভুল। আপনাদের এই রায় ঐতিহাসিক ভুল হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, আমার সাথে কিভাবে ঝগড়া হয়েছে, আপনারা দেখেছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের ধীরস্থিরভাবে এগুতে হবে, যাতে কোনো রকম ভুল না হয়। বিএনপির কাছে আর কোনো অস্ত্র নেই। এই রায় নিয়ে মওদুদ সাহেব লম্বা লম্বা কথা বলেন।

বিএনপির আমলে সবচেয়ে ‍বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিচার করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা রয়েছে। এসব মামলা স্থগিত করে তারা লম্বা বক্তব্য দেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলা বন্ধ করে রেখেছিল, কোটালিপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা হামলার বিচার বন্ধ করে রেখেছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা বন্ধ করে রেখেছিল। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল মামলা, গ্যাটকো মামলা কোনোভাবে এগুনো যাচ্ছে না। যখন তাদের মামলা আসে তারা দলবল বেধে আদালতে যান। আমরা তখন অসহয় বোধ করি।

আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের প্রতি আহবান করে তিনি বলেন, আপনারা আমাদের সাথে থাকেন। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। এই মামলাগুলো যদি নিষ্পত্তি করা যায় তাহলে তাদের মুখোশ উন্মোচন হবে।

বৃহত্তর ফরিদপুর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এসএম মুনীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মতিন খসরু, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহবায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সদস্য সচিব শেখ ফজলে নূর তাপস প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বৃহত্তর ফরিদপুর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ ওবাঈদ হোসেন সেতু।

(ঢাকাটাইমস/২২আগস্ট/এমএবি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :