মাদারীপুরে ব্লু হোয়েল গেম খেলার দাবি নেশাগ্রস্ত এক স্কুলছাত্রের!
মাদারীপুরের রাজৈরে প্রচারণা পেতে নিজের হাতে একটি মাছের চিত্র একে ব্লু হোয়েল গেম খেলে ব্লু হোয়েলকে হারিয়ে জিতে গেছে দাবি করা নেশাগ্রস্ত অষ্টম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন বাবা-মা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে রাজৈরের টেকেরহাট বন্দরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কুঠিবাড়ি গ্রামের মালো পরিবারের ছেলে ‘রাজৈর গোপালগঞ্জ কেজেএস উচ্চ বিদ্যালয়’-এর অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রকে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানায়, এলাকার ব্যক্তি তাকে সিগারেটের মধ্যে গাঁজা ভরে খাইয়েছে। তবে সে ব্লু হুইল গেমের সপ্তম ধাপে গিয়ে নির্দেশনা অনুযায়ী হাতে মাছের ছবি এঁকেছে।
ওই শিক্ষার্থী মা-বাবা জানান, বেশকিছু দিন ধরে তার ছেলের আচরণে পরিবর্তন দেখতে পান। এরপর হাতে মাছের ছবি আঁকা দেখে তাদের সন্দেহ হলে বিষয়টি জানতে পারে। এরপর তাকে টেকেরহাট বন্দরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এলাকাবাসীর দাবি, ছেলেটি প্রচার পেতে এই ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে। চাকু বা সুঁই দিয়ে হালকা দাগ দিয়ে তার হাতে ছোট পুঁটি মাছ বা তেলাপিয়া মাছের মত ছোট আকৃতির একটি চিত্র এঁকেছে। তাকে বাড়ির একেবারে পাশে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি না করে ৫ কিলোমিটার দূরের টেকেরহাট বন্দরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার বিষয়টিও রহস্যময়। ওই স্কুলছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত বেড়িয়ে আসবে বলে।
এদিকে ওই স্কুলছাত্র পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে, মোবাইলের মাধ্যমে সে ব্লু হুইল গেমের লিংকে ঢুকে গেমটি খেলেছে। সপ্তম রাউন্ডে গিয়ে তার হাতে তিমি মাছের ছবি আঁকতে বললে সে ছবি আঁকে। এরপরের রাউন্ডে কি আছে জানতে চাইলে গেমে তাকে জানানো হয় যে, হাতে একশ সুঁই ফুটিয়ে ছবি তুলে পাঠাতে হবে। তখন সে গেম না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে মোবাইল ফোনসেট ভেঙে ফেলে।
ওই কিশোরের ভাষায়, ব্লু হুইল গেম আমাকে হারাতে পারেনি, আমি ব্লু হুইল গেমকে হারিয়ে দিয়েছি!
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, শারীরিকভাবে ছেলেটি অসুস্থ নয়। প্রাথমিকভাবে ছেলেটিকে নেশাগ্রস্ত মনে হয়েছে। সোমবার রাতে তার সাথে কথা বলে মনে হয়েছে- সে ঘোরের মধ্যে আছে। ছেলেটি গাঁজা খায় বলে জানিয়েছে। এলাকার একজনের নাম বলে ছেলেটি বলেছে যে, তাকে সিগারেটের মধ্যে গাঁজা ভরে খাওয়ানো হয়েছে।
ওসি জিয়াউল মোর্শেদ আরো বলেন, যেহেতু ছেলেটি আত্মহত্যার চেষ্টা বা অন্য কোন অপরাধের সাথে জড়িত হয়নি। তাই তাকে আমরা আইনের আওতায় আনতে পারিনি। ছেলেটি বাবা-মায়ের জিম্মাতেই রয়েছে। তবে মোবাইল ও নেশা এই দুই বিষয়েই অভিভাবকের সচেতন থাকা উচিত।
(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)