খেলার জন্য মরণটাই বাকী ছিল

জহির উদ্দিন মিশু, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:৩৯ | প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারি ২০১৭, ০৯:১৬
ছবি: টিম সাউদির বাউন্সে লুটিয়ে পড়েছেন মুশফিক।

দিন শেষে হাজারো আফসোস আর দীর্ঘশ্বাসের মধ্যে ডুবে না থেকে তৃপ্তির ঢেকুরও তোলা যেতো। বাংলাদেশ হয়তো ৭ উইকেটে হেরেছে। এটা বেমানান।

কিন্তু হারেননি মুশফিক-ইমরুল। দলের জন্য, দেশের জন্য লড়েছে প্রাণপণ। দাঁতে-দাঁত লাগিয়ে শরীরের শেষ শক্তিটুকু বিসর্জন দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে।

বোধ হয় খেলার জন্য তাদের মরণটাই অবশিষ্ট ছিল। কি কষ্টটাই না করেছে তাঁরা। মাশরাফিকে নিয়ে আমরা কতো কাব্য কতো প্রশংসা করি। যদিও তিনি কাব্য করার মতো উপলক্ষ রেখে গেছেন। কিন্তু মুশফিক-ইমরুল দলের জন্য যা করেছে, সেটি তো ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল।

নিউজিল্যান্ড সফরে একাধিকবার ইনজুরির চোবলে পড়েছেন মুশফিক। সর্বশেষ ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রান করতে গিয়ে দুই হাতেই ব্যথা পান তিনি। তারপরও হাল ছাড়েননি। দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে নেমেছেন ২২ গজে।

মাঠে একের পর এক বুলেট গতির বল মুশফিকের শরীর বরাবর ছুঁড়তে লাগল কিউই পেসাররা। বলা যায়, শেষ দিন সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম ক্রিকেট খেলতে নামে নিউজিল্যান্ড দল। তবুও মাথা নত করেননি তিনি। হাতের ব্যথা নিয়েও দলকে ভরসা দিয়ে যান।

হঠাৎ মুশফিকের মাথায় বলের আঘাত। ফিল হিউজের কথা স্মরণ করে শিউরে উঠলো সারা বিশ্ব। শেষ পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে মাঠ ছাড়তে হল টাইগার দলনেতাকে। সেখানেও চুপ ছিলেন না মুশফিক। দলের জন্য অস্থির হয়ে পড়েন তিনি। বারবার জানতে চান ম্যাচের খবর। দলের অবস্থা খারাপ শুনে তাঁর অস্থিরতা আরও বেড়ে যায়।

হাসপাতাল থেকে মাঠে যাওয়ার জন্য চটপট করতে থাকেন মুশফিক। একপর্যায়ে এক্স-রে রিপোর্ট ইতিবাচক হওয়ায় ডাক্তার তাঁকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছিল পূর্ণ বিশ্রাম। কিন্তু মাঠে গিয়ে সোজা ড্রেসিং রুমে চলে যান মুশফিক। দলের খারাপ অবস্থা দেখে আবারও ব্যাটিংয়ে নামতে চান তিনি।

অপরদিকে ইমরুল, বদলী কিপার হিসেবে মুশফিকের জায়গায় দেড়শ ওভারের মতো কিপিং করেন। গড়েন বিশ্বরেকর্ডও। এরপর ব্যাট হাতে দ্রুত রান নিতে গিয়ে বাঁ ঊরুতে চোট পান তিনি। পিচেই বেশ কিছুক্ষণ পড়ে থাকেন ইমরুল। খানিক বাদে স্ট্রেচারে চড়ে তাঁকেও মাঠ ছাড়তে হয়েছে।

ভীষণ ব্যথা। শেষ দিনে ইমরুলের খেলাটা একপ্রকার অনিশ্চিতই ছিল। তারপরও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নামলেন ব্যাট করতে। দলকে উপহার দিলেন অপরাজিত ৩৬ রানের ইনিংস। অথচ দিন শেষে আমরা অনেকেই বলছি, ইমরুল থাকলে তো বাংলাদেশ হারবেই। আহ!

লেখক: ক্রীড়া সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :