নওগাঁর ফুল যাচ্ছে দেশের বৈশাখি মেলাগুলোতে

সাজেদুর রহমান সাজু, নওগাঁ
  প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:৪৪
অ- অ+

আসছে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ। বাঙালির প্রাণের উৎসব। আর এই বৈশাখকে সামনে রেখে নানান রঙের বাহারি কাগজ, কাপড় ও শোলা দিয়ে কৃত্রিম ফুল তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার জামগ্রামের ফুল কারিগররা।

এই গ্রামে গোলাপ, স্টার, সূর্যমুখী, কিরণমালা, মানিক চাঁদ, জবা, বিস্কুট, গাঁদাসহ বিভিন্ন নামের ফুল তৈরি করা হয়। যেন দেখে মনে হবে- এক একটা জীবন্ত ফুল।

বৈশাখে বাবা-মার হাত ধরে যে শিশুটিকে রঙিন ফুল নিয়ে ঘুরতে দেখা যায়, তা তৈরি হয় নওগাঁর আত্রাই উপজেলার জামগ্রামে।

আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়েনের একেবারেই অবহেলিত একটি গ্রাম জামগ্রাম। রাতের আঁধারে এই গ্রামবাসীদের বিদ্যুৎবিহীন ঘুমাতে হয়। অথচ বাংলাদেশের মধ্যে এটিই একমাত্র গ্রাম যেখানে কাগজ, কাপড় ও শোলার রঙিন বাহারি বিভিন্ন রকমের কৃত্রিম ফুল তৈরি হয়। এখানকার তৈরি ফুলই দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় হয়। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এখনো এই হস্তশিল্পটিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি।

গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়বে বিভিন্ন স্থানে জটলা বেঁধে কয়েকজন মিলে তৈরি করছে এই ফুলগুলো। ফুল তৈরির পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ফেরি করে বিক্রি করে এলাকার ব্যবসায়ীরা। তবে পহেলা বৈশাখে এই ফুলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে দুই ঈদে, বিভিন্ন পূজা ও মেলায়ও এই ফুল বিক্রি হয়।

প্রায় তিনি যুগ আগে ২-৩টি পরিবার এই ফুল তৈরির কাজ শুরু করে। এখন তাদের হাত ধরে পুরো গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস এই ফুল তৈরি। বর্তমানে এই গ্রামের প্রায় ৬শ পরিবার এই বাহারি ফুল তৈরির কাজে নিয়োজিত। সংসার দেখভাল করার পাশাপাশি এই গ্রামের নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই এই ফুল তৈরি করার কাজ করে।

আফতাব উদ্দীন জানান, আমাদের গ্রামটি খুবই অবহেলিত। এই গ্রামে এখনো পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসে নাই। তাই এই সব কারিগররা শত ইচ্ছে থাকলেও রাতে এই ফুল তৈরির কাজ করতে পারে না। তাই আমাদের এই শিল্পটিকে আরো গতিশীল করার জন্য এই গ্রামে বিদ্যুৎ প্রয়োজন।

রোমানা খাতুন বলেন, ফুল তৈরিতে পরিবারের গৃহিনীদের অবদান সবচেয়ে বেশি। আমরা আমাদের সংসারের সব কাজ সম্পন্ন করে পরিবারের পুরুষদের এই ফুল তৈরিতে সাহায্য করি।

স্থানীয় সাংসদ ইসরাফিল আলম বলেন, এটি একটি ঐতিহ্যপূর্ণ শিল্প। যার কদর সারাদেশে। সৌখিন মানুষ ও শিশুদের কাছে এই বাহারি কৃত্রিম ফুলগুলোর চাহিদা অনেক বেশি। এই শিল্পটিকে আরো সম্প্রসারিত করার জন্য সরকারের কাজ করা উচিৎ। এই গ্রামের মানুষদের আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারলে তারা এই শিল্পটিকে আরো অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। এতে সরকার এই শিল্প থেকে অনেক অর্থ রাজস্ব হিসেবে আয় করতে পারবে। এ কারিগরদের জন্য যদি হস্তশিল্পটির উপর উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হতো, তাহলে এই শিল্পটি আরো আধুনিক মানসম্মত হতো। আমি চেষ্টা করব- এই গ্রামের মানুষদের আরো বেশি বেশি সহযোগিতা করার জন্য।

(ঢাকাটাইমস/১২এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকরা আওয়ামী দুঃশাসনে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন: ডা. রফিক
যুবদল নেতা মনিরের ‘বার কাণ্ড’: মদ্যপান, হুমকি, হামলা—শেষমেশ বহিষ্কার
সংস্কারে সমর্থন আছে যুক্তরাষ্ট্রের, নির্বাচন বিষয়েও জানতে চেয়েছে দেশটি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
এহসান মাহমুদে বিব্রত বিএনপি, যেভাবে দলে ঢোকেন তিনি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা