বাকৃবিতে সংরক্ষিত ভ্রুণ থেকে বাচ্চা উৎপাদন

দেশে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গবাদি পশুর ভ্রুণ সংরক্ষণ এবং স্থানান্তরের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন ভেটেরিনারি অনুষদের ‘সার্জারি এবং অবস্টেট্র্ক্সি’
বিভাগের গবেষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের “অ্যানিমেল রিসার্চ ফার্ম” এ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব কথা জানান প্রকল্পের প্রধান গবেষক নাছরীন সুলতানা জুয়েনা।
গত ২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকদের সফলতায় স্থানান্তরিত ভ্রুণ দ্বারা একটি ভেড়ি দুইটি বাচ্চা প্রসব করে। যার মধ্যে গবেষক দল একটি শাবকের নাম দিয়েছেন ‘বাউভি উৎসা’ এবং অপরটির নাম দিয়েছেন ’বাউাভি আশা’। ওই ভেড়িতে সুপার ওভুলেশনের মাধ্যমে দুইটি ভ্রুণ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল।
২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের হেকেপ প্রকল্পের মাধ্যমে ভেটেরিনারি অনুষদের ‘সার্জারি এবং অবস্টেট্র্ক্সি’ বিভাগের গবেষকরা গরু এবং ভ্রুণ স্থানান্তরের কাজ শুরু করেন। উন্নত জাতের গাভী এবং দেশীয় ভেড়ি হতে ভ্রুণ উৎপাদন, ভ্রুণগুলোকে মাঠ পর্যায়ে গাভী ও ভেড়িতে প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে সংরক্ষণ এবং উন্নতজাতের ষাঁড় হতে উচ্চমানসম্পন্ন লিঙ্গ নির্ধারণী শুক্রানু উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে চলমান প্রকল্পটি অগ্রসর হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে গবেষকগণ ইতিমধ্যে ১১ টি ভেড়িতে ২২ টি হিমায়িত ভ্রুণ প্রতিস্থাপন করেছেন।
এ সম্পর্কে প্রকল্পের প্রধান গবেষক নাছরীন সুলতানা জুয়েনা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সাধারণ নিয়মে প্রতিটি ভেড়ি বছরে সর্ব্বোচ্চ চারটি এবং গাভী বছরে একটি বাচ্চা প্রসব করতে পারে। কিšুÍ সুপার ওভুলেশনের মাধ্যমে বছরে ২৫ থেকে ৩০ টি উচ্চমানসম্পন্ন ভ্রুণ উৎপাদন সম্ভব। এই ভ্রুণ যে কোন সাধারণ জাতের ভেড়ি ও গাভীতে স্থানান্তরিত করে উন্নত জাতের শাবক বাছুর উৎপাদন করা সম্ভব।’ এই গবেষণা গ্রামীণ কৃষকের চাহিদাপূরণ এবং গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নে গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে জানান এই গবেষক।
এ সম্পর্কে প্রকল্পের পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন বারী বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো গবাদিপ্রাণির ভ্রুণ সংরক্ষণ ও প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে এবং এতে করে গ্রামীণ কৃষকরা প্রয়োজনমতো ভ্রুণ সংগ্রহ এবং তা প্রতিস্থাপন করে গবাদিপশুর মানসম্মত প্রজনন নিশ্চিত করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগে স্থায়ী সিমেন ও ভ্রুণব্যাংক তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রকল্পের পিএইচডি ফেলো রফিকুল ইসলাম তালুকদার গবেষণার সফলতায় আশা করে বলেন, উদ্ভাবিত হিমায়িত ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তি গবাদিপশুর প্রয়োগের মাধ্যমে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখা সম্ভব হবে। ঢাকাটাইমস/০৪মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

মন্তব্য করুন