নিহত ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্যকে নিয়ে যা জানা গেল

শাহরিয়ার আলম সাম্য। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। স্বনামধন্য এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তিনি ২২২ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন সাম্য। তার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর বুধবার সাম্যের মরদেহ তার নিজ গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে সাম্যের মা মারা গেছেন। তার বাবা ফরহাদ সরদার সন্তানদের নিয়ে ঢাকাতেই থাকেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল সাম্য। নিজ এলাকায় সাম্যের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী সবাই তাদের বাড়িতে আসছেন। তারা সাম্যের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছেন।
সাম্য অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গ্রামে থাকতে সাম্য উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল থেকে পড়ালেখা শেষ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন।
নিহতের চাচা কাউসার আলম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অন্য একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এরপর বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা সাম্যের ডান পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে সাম্য নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন— তামিম হাওলাদার, সম্রাট মল্লিক এবং পলাশ সরদার। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই পেশায় ভাসমান হকার। তারা রাতে মদ-গাঁজা খায়, নেশা করে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন তাদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’
অন্যদিকে মেধাবী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য মৃত্যুর ঘটনায় ঢাবি প্রশাসন শোক জানিয়েছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে। সাম্যের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। তারা নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
(ঢাকা টাইমস/১৪মে/এসএ)

মন্তব্য করুন