সেতু নয়, দাবি একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকার

নাটোরের সিংড়া সদর থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে কতুয়াবাড়ী ঘাট। এক সময় মাঝি হিরেনের নামে কতুয়াবাড়ি ঘাটটি ‘হিরেন ঘাট’ নামে পরিচিত ছিল। সময়ের পরিক্রমায় হিরেনের মৃত্যু হলেও পাল্টেনি সেই ঘাট পারাপারে একমাত্র ডিঙি নৌকা। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এই ঘাটে একটি মাত্র ডিঙি নৌকায় চেপে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পারাপার হচ্ছে। আশপাশের ১০ গ্রামের অসংখ্য নারী-পুরুষও পোহাচ্ছে দুর্ভোগ।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের ১১নং ওয়ার্ডের কতুয়াবাড়ি গ্রামে গুড়নাই নদী পারাপারে কোনো সেতু নেই। এখানে পারাপারে ডিঙি নৌকাই একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে এই ঘাটে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে। এখন শিক্ষার্থীদের দাবি সেতু নয়, একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাই তাদের মৃত্যুঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে, পারে বই-খাতা নদীর পানি থেকে ভিজে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে।

কথা হয় হিরেনের ছেলে ঘাট মাঝি তপনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো গরিব মানুষ, আমগো তো থাকন-খাওনেরই জায়গা নেই। ইঞ্জিনচালিত নৌকা কিনবো কেমনে। ভাই একটু ভালো করে ছবি তোলেন, এনে যেন তাড়াতাড়ি একটা সেতু হয়।’

স্থানীয় শিক্ষিকা শাহারুবা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ছোট্ট ডিঙি নৌকা সব সময় ডুবডুব হয়ে থাকে। আমি নিজেও একদিন নদীতে ডুবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এরপর থেকেই নদী পারাপারের সময় আতঙ্কে থাকি।’

কতুয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারদুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এই নদী পার হয়ে সোহাগবাড়ি, কতুয়াবাড়ি, চকসিংড়া, শোলাকুড়া, বাগান পাড়া ও মহেশচন্দ্রপুর গ্রামের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই ডিঙি নৌকায় চেপে নদী পারাপার হয়। প্রায়ই নৌকা থেকে অনেক শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে আহত হয়। আবার অনেকের বই-খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। সব সময়ই শিক্ষকদের আতঙ্কে থাকতে হয়। এখানে কোনো সেতু না হোক একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ঘাট নির্মাণের জন্য অনেক জায়গায় আবেদনও করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি।’

(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)