বোরোতে ব্লাস্ট, দিশেহারা চাষিরা

শরীফুল ইসলাম, চাঁদপুর
  প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:০৯
অ- অ+

বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশিতেই ছিলেন কৃষকরা। কিন্তু মৌসুমের শেষ মুহূর্তে ব্লাস্ট রোগের ব্যাপক আক্রমণে সোনালী ফসলের রঙিন স্বপ্ন ভেঙে যেতে বসেছে তাদের।

হতাশ চাষিদের দাবি, কৃষি অফিসের পরামর্শে বার বার জমিতে কীটনাশক স্প্রে করেও রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো যাচ্ছে না, বরং দিন দিন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে এ মৌসুমে ফসল ঘরে তুলতে না পারার আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের জমিতে রোপিত বোরো ধানে নেক ব্লাস্ট ও লিফ ব্লাস্ট রোগ মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বিআর-২৮ জাতের ধানে এ রোগের প্রবণতা বেশি। দিনে গরম-রাতে ঠাণ্ডা, কুয়াশা, অতিবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া এ দুই রোগে প্রাদুর্ভাবের কারণ বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তা ও চাষিরা।

উপজেলার তালতলী, কলাকান্দা, ঠাকুরচর, গজরা, সুজাতপুর, নাথুতহশিলদার কান্দি, আদুরভিটি বিলে সরেজমিনে দেখা গেছে, বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও নেক ব্লাস্ট ও লিফ ব্লাস্ট রোগ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

দেওয়ানজিকান্দি গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া জানান, নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত ধানের পাতা ঝলসে ও ধান সাদা হয়ে চিটা হয়ে যায়। এটিকে কৃষি বিভাগের লোকজন লিফ ব্লাস্ট রোগ বলেও দাবি করছেন।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে ৯ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের পর বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। রোগের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার ৪৩টি কৃষি ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ১৩ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাঠে ছুটে গিয়ে ধান রক্ষায় চাষিদের প্রয়োজনীয় (সঠিক) কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।

আদুরভিটি গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে বিআর-২৮ ধান করেছি। কৃষি অফিসের পরামর্শে নেক ব্লাস্ট আক্রান্ত জমিতে চারবার স্প্রে করার পরও কোনো প্রতিকার পাইনি। এখন আমার কি হবে? এক মুঠো ধানও পাবো না।’

আদুরভিটি, দেওয়ানজিকান্দি ও ঠাকুরচর বিলের প্রায় ২০ একর জমি নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নাথুতহশিলদারকান্দি গ্রামের খোরশেদ আলম মিজি জানান, এমন কোনো জমি নেই, যেখানকার ধান নেক ব্লাস্ট ও লিফ ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়নি। এ রোগ দিনের পর দিন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে এ মৌসুমে কৃষকরা ঘরে ফসল তুলতে না পারার আশঙ্কায় আছেন।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন জানান, ব্লাস্ট প্রতিরোধে বিভিন্ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে এবং মাঠ দিবস করে কৃষকদের প্রয়োজনীয় (সঠিক) কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন।

ধানের জমিতে রোগ হোক বা না হোক শীষ বের হওয়ার আগেই জমিতে সঠিক কীটনাশক পরিমাণমতো মিশিয়ে সাতদিনে দুবার প্রয়োগ করতে হবে বলেও জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/প্রতিবেদক/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হবিগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত ২
শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে লঙ্কানরা
টস হেরে বোলিংয়ে বাংলাদেশ
৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’, সাধারণ ছুটি ঘোষণা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা