ডেঙ্গুতে শরীয়তপুরের স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০১৯, ২০:৫৩

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জব্বার আকনকান্দি গ্রামের বর্ষা আক্তার (২৮) নামে এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন।

তিনি স্থানীয় শাহেদ আলী মাদবরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, বর্ষা আক্তার গত ১৮ জুলাই জ¦রে আক্রান্ত হন। প্রথম দিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। জ¦রের শরীর নিয়েই বিদ্যালয়ে যেতেন। বেশি অসুস্থ হয়ে গেলে গত ২৫ জুলাই পরিবারের সদস্যরা তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তার শরীরে ডেঙ্গু জ¦রের আলামত পান। তারা তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দেন। পরের দিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাকে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। স্বজনরা গত শনিবার তাকে ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকায় প্রএ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাকে কয়েক দফায় ১০ ব্যগ রক্ত দেয়া হয়। তার অবস্থা ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বুধবার তার মরদেহ জাজিরার জব্বর আকনকান্দি গ্রামে আনা হয়। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন, বিদ্যালয়ের শিক্ষ-শিক্ষার্থী ও শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা ছুটে যান। বুধবার দুপুরে তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শাহেদ আলী মাদবরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিলা আক্তার নিহত শিক্ষিকার সন্তানের জন্য আহাজারি করে বলেন, বর্ষার প্রাণ ছিল মেয়ে দুটি। মা যখন স্কুলে থাকত তখন মেয়ে দুটিও তার সাথে থাকত। বর্ষা না ফেরার দেশে চলে গেল। এখন শিশু দুটি কে দেখবে, ভাবলেই বুকের ভেতর দুমরে-মুচরে যায়।

বর্ষার স্বামী মিজানুর রহমান নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। স্ত্রীর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে ঢাকায় ছুটে আসেন। পাঁচ দিন স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেন।

মিজানুর রহমান বলেন, বর্ষার নিথর দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে এটা ভাবতে পারিনি। মেয়ে দুটি বাবার বাবার তাদের মায়ের খোঁজ করে। আমি কি বলে তাদের শান্তনা দেব? আল্লাহ কেন আমাকে এমন কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ফেললেন।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা মাহমুদুল হোসেন খান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা জাজিরায় তার বাড়িতে বসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। সাথে সাথে তাকে ঢাকায় রেফার করি। এখন পর্যন্ত জাজিরায় ছয়জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অন্য রোগিরা ঢাকা থেকে জ¦র নিয়ে জাজিরায় এসেছিলেন।

শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন মো.খলিলুর রহমান বলেন,বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলায় ১০ জন ডেঙ্গুরোগী সনাক্ত হয়েছে। ডেঙ্গু সচেতনতার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। আমাদের উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্ত করার পরীক্ষা করা হচ্ছে। যারা এখানে চিকিৎসা নিচ্ছে তাদের সবোর্”চ সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :