সংসদে রাঙ্গাকে একহাত নিলেন ফিরোজ রশীদও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর ২০১৯, ২১:০৪
অ- অ+

নূর হোসেনকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে এবার নিজ দলের সংসদ সদস্যের সমালোচনার মুখে পড়লেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ সংসদে নূর হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বক্তব্যের জন্য রাঙ্গার কড়া সমালোচনা করেন। দলের পক্ষ থেকে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

মঙ্গলবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্যরা মশিউর রহমান রাঙ্গাকে সংসদে এসে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান এবং জাতীয় পার্টির অবস্থান জানতে চান।

পরে সংসদে ফ্লোর নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘বান্দরকে লাই দিলে গাছের মাথায় ওঠে। আমি যতদিন রাজনীতি করি ততদিন ওর (মসিউর রহমান রাঙ্গা) বয়সও না। ও এই ধৃষ্টতা দেখায় কীভাবে, এই দুঃসাহস কীভাবে পেল? এই সংসদই তাকে লাই দিয়েছে।’

ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা সম্পর্কে বক্তব্য হয়েছে। তার বক্তব্য আমি শুনেছি, আমি সেদিন সভায় ছিলাম না। পরে এটা ভাইরাল হয়ে গেছে। এই বক্তব্য জাতীয় পার্টির বক্তব্য না। এটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য হতে পারে না। এটা রাঙ্গার নিজস্ব বক্তব্য হতে পারে। এই বক্তব্যের জন্য জাতীয় পার্টি লজ্জিত। আমরা দুঃখিত এবং অপমানিত অনুভব করছি।’

‘নূর হোসেন ৯০-তে তার জীবন দিয়ে গেছেন। যে যুবক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিতে পারেন, স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে পারেন সেই সাহসী যুবকের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। আমরা কখনো এই ধরনের ধৃষ্টতা দেখাই নাই। এই ধরনের অপমানজনক কথা কখনো বলি নাই। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার বক্তব্য হতে পারে না।’

ফিরোজ রশীদ আরও বলেন, ‘একটি কথা আছে বান্দরকে লাই দিলে গাছের মাথায় ওঠে। এই লাই আমরা দেই নাই। এই লাই এই সংসদই দিয়েছে। যাদের অতীত নাই, বর্তমানে কিছুই ছিল না। হঠাৎ তাকে মন্ত্রী বানানো হলো, একটার পর একটা প্রমোশন দেওয়া হলো। আমরা তো তাজ্জব হয়ে গেলাম! এগুলো আমরা দেইনি। এই সংসদে সে চিফ হুইপ। আমি একদিন বললাম তাজুল ইসলাম চৌধুরী মারা গেছেন, তার বিষয়ে বক্তব্য রাখব। সে বলে—আপনি দেবেন, আমি কেন নাম পাঠাব। এই ধৃষ্টতা সে দেখাতে পারে।’

‘আমি যতদিন রাজনীতি করি ততদিন ওর বয়সও না। সে করেছে যুবদল। কোথায় আন্দোলন করেছে? কোথায় সংগ্রাম করেছে? শুধু তাই না প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কেও সে কথা বলেছে। সে গণতন্ত্রের ছবক দেয়। যে লেখাপড়া করে নাই, রাতারাতি কাগজের মালা গলায় দিয়ে পরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে হঠাৎ করে এখানে এসে বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়ে গেছে। সে এ ধরনের ধৃষ্টতা দেখায়। আর তার জবাব দিতে আজ সংসদে দাঁড়াতে হয়। আজকে খুব লজ্জিত। এটা সম্পূর্ণ আমাদের ঘাড়ে এসে পড়েছে। আমরা দুঃখিত। নূর হোসেনের গায়ে লেখাটা ছিল একটা পোস্টার। সারা বিশ্বের লোক দেখেছে। এটা ছিল তার মনের কথা।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যৌবনের ধর্মই হলো আন্দোলন-সংগ্রাম। কতজন পারে তার জীবন বিলিয়ে দিতে? সেই নূর হোসেন সম্পর্কে যে কথা বলেছে তাকে ওউন করি না। আমাদের দল এটাকে গ্রহণ করে না। আমরা চরম ঘৃণাভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা লজ্জিত। দুঃখ প্রকাশ করছি। এটা তার ব্যক্তিগত কথা। এ জন্য দল তার দায়িত্বে নেবে না। এ দেশের মানুষ মনে করে বঙ্গবন্ধু কন্যা আজ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। আমি বিরোধী দল করতে পারি। প্রত্যেকটি মানুষ মনে করে যতদিন শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন ততদিন এই দেশে গণতন্ত্র টিকে থাকবে। ততদিন এই দেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে এবং এই দেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করেছি। আমাকে যদি প্রধানমন্ত্রী সেদিন পরিচয় করিয়ে না দিতেন, আমার জন্য যদি ভোট না চাইতেন আমি নির্বাচিত হয়ে এই সংসদে আসতে পারতাম না। মানুষ এত অকৃতজ্ঞ হয় কীভাবে? রাঙ্গা সাহেব পাস করেছেন, মনে করছেন তার নিজের জোরে। পিছে যদি আওয়ামী লীগ না থাকত, ওই রংপুরে নামতেও পারতো না। কার কত ভোট আছে আমাদের জানা আছে। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’

(ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/বিইউ/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যাত্রাবাড়ীতে ৪৮ কেজি গাঁজাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার, পিকআপ জব্দ
নির্বাচনকে ব্যাহত করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি পরিকল্পিত: বিএনপি
কক্সবাজারের যৌথ অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১ জন আটক
গোপালগঞ্জে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকারের তদন্ত কমিটি গঠন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা