নেতার গুণাবলী কী দেখলেন তরুণরা!

অনুষ্ঠানটি ছিল জাতীয় তরুণ নেতৃত্ব উৎসব। দেশের ৭২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০০ তরুণ তাতে অংশ নেন। সেখানে বিভিন্ন সফল ব্যক্তিদের বক্তব্যে তারা জানলেন কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়। নেতৃত্বের গুণাবলি কী। অথচ এই অনুষ্ঠানে আসার কথা দিয়েও ওয়াদা রাখেননি দেশ পরিচালকদের দুই নেতা। এতে কী শিখলেন তরুণ নেতৃত্বরা?
অথচ পাশেই আর একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওই দুই নেতার একজন।। কিন্তু তার সময় হয়নি তরুণদের একনজর দেখে যাওয়ার।
শুক্রবার রাজধানী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ছিল ন্যাশনাল লিডারশিপ কার্নিভাল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলা অনুষ্ঠানে একটি সেশনে বক্তব্য দেন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপক কুমার বণিক। তিনি তরুণদের রাজনীতিতে আসার তাগিদ দিয়ে বলেন, রাজনীতির মাধ্যমে দেশ ও সমাজে বেশি ভূমিকা রাখা যায়। রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকে দেশ পরিচালনার নেতা তৈরি হয়। তরুণরা যেন রাজনীতিবিমুখ না হয়।
এরপর বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল। তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি জানি না তোমরা লিডার হবে কি না। হলে ভালো, না হলেও খারাপ না। সবাইকে লিডার হতে হবে কে বলছে!
অনুষ্ঠানে বক্তাদের বক্তব্যে যে বিষয়টা খুব জোরালোভাবে উঠে আসে তা হলো লিডারকে কথা দিয়ে কথা রাখতে হবে। কথা আর কাজে মিল থাকতে হবে। কারণ লিডারকে তার অনুসারীরা পর্যবেক্ষণ করে।
কিন্তু দিনব্যাপী তরুণরা সবার কথা শুনতে পারলেও বঞ্চিত হলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে। বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রীর দেখাও পাননি তারা। তারা একজনও আসেননি অনুষ্ঠানে।
সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা দুপুরের পর থেকে অপেক্ষা করতে থাকেন দুই অতিথির বক্তব্য পেলে তারা অন্য অ্যাসাইনমেন্টে যাবেন। প্রধান ও বিশিষ অতিথি ‘আসছেন’ জানাতে জানাতে বিকালের দিকে আয়োজকরা বিব্রত হচ্ছিলেন এ বিষয়ে আর কোনো ঘোষণা দিতে।
পরে জানা গেছে, মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী দুজনই নাকি আয়োজকদের জানিয়েছেন হঠাৎ আর একটা অনুষ্ঠান থাকায় তারা আসতে পারেনি।
ওই দিনই পাশে বেইলি রোডে জাতীয় মহিলা সংস্থায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। এত কাছে এসে কেন কৃষিমন্ত্রী তরুণদের অনুষ্ঠানে এলেন না, তা নিয়ে পরে কাউকে কাউকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত এক ফাঁকে এসে একটু দেখা করে দু-চারটি কথা বলে যেতে পারতেন ওই নেতারা। কিন্তু সেটি আর হলো না।
নেতৃত্বের গুণাবলি শিখতে এসে কী জেনে গেল তরুণরা?
শুক্রবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) অডিটোরিয়ামে তরুণদের জন্য `ন্যাশনাল লিডারশিপ কার্নিভাল ২০১৯’ আয়োজন করে ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশ। সহযোগিতায় ছিল ইউকে এইড এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। যুক্তরাজ্যের ইউকে এইডের প্রতিনিধিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক, এমসিসিআইর সভাপতি নিহাদ কবীর, ডিএফআইডির বাংলাদেশ প্রতিনিধি জুডিথ হারবার্টসন, বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল হায়দার আলী খান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহিন আনাম, ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশের সভাপতি আরিফিন রাহমান হিমেল ও সাধারণ সম্পাদক সানজিদা জামান, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের সিওও ডা. এ কে এম ইকরামুল হুসাইন, স্মার্ট টেকনোলজিস বিডির ডিরেক্টর মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন, অভিনেতা জাহিদ হাসান, প্রীত রেজা, আরিফ আর হোসাইন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রেজওয়ানুল করিম, শহরিয়ার মান্নান।
(ঢাকাটাইমস/১ডিসেম্বর/জেআর/মোআ)

মন্তব্য করুন