তীব্র শীতে দিনাজপুরে জনজীবনে ছন্দপতন
হিমেল হাওয়া আর শীতে কাঁপছে দিনাজপুরসহ উত্তরের জনপদ। বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে ছিন্নমূল-হতদরিদ্র মানুষের অবস্থা চরম শোচনীয়। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। দিনাজপুরে শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ।
ভৌগলিক কারণে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সীমান্ত জেলা দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েক জেলায় এবার প্রকোপ আকার ধারণ করেছে শীত। তীব্র শীতে নাকাল জনজীবন। জবুথবু হয়েছে মানুষ।
দিনের বেলায় কুয়াশার পরিমাণ কম থাকলেও রাতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। ঋতু বৈচিত্র্যের এই খেলা বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কুয়াশার পাশাপাশি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরোচ্ছে না কেউ।
ঘন কুয়াশার কারণে দিনের মধ্যেও দিনাজপুরের বিভিন্ন মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন। শীতে রেললাইন ও বস্তি এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। ছন্দপতন হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
শীতবস্ত্রের অভাবে সব থেকে বেশি কষ্টে আছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। একইসাথে দেখা দিয়েছে শীতজনিত নানা রোগ। ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ নানা শীতজনিত রোগে কাহিল হয়ে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। দেখা দিয়েছে, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি।
দিনাজপুর জেলা সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, যেসব শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত এবং ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের চিকিৎসা চলছে। জেলার ১৩ উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সদর হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অপরদিকে ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কৃষকের আলু ক্ষেত ও বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন শাকসব্জি। বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। আলুর খেতে দেখা দিয়েছে লেটব্রাইটসহ বিভিন্ন রোগ।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদুল ইকবাল জানান, বোরো বীজতলা রক্ষা ও রোপনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম জানান, শীতের প্রকোপ থেকে জেলার মানুষকে রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে জেলায় বেশকিছু শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৮০ হাজার পিস শীতবস্ত্র বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থপনা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ঢাকাটাইমস/২৮ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর