সরকারি দলের হইচই, বিএনপির হারুনের ওয়াকআউট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ জুন ২০২০, ১৬:৫৮ | প্রকাশিত : ২৩ জুন ২০২০, ১৬:২৫

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের হইচইয়ের মুখে পড়লেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ। পরে তার বক্তব্যের কিছু বিষয় নিয়ে ডেপুটি স্পিকার মন্তব্য করায় এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সময় বাড়িয়ে দেয়ায় সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন আলোচিত এই সাংসদ।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে হারুন অর রশিদকে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার জন্য ১২ মিনিট সময় দেয়া হয়। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হারুন অর রশিদ চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে মানুষ বাঁচানোর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রস্তাব করেন। এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ তুলে তা প্রত্যাহারের দাবি করেন। সংসদে তারেক রহমানের প্রসঙ্গ ওঠায় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা সবাই তার প্রতিবাদ করেন। সংসদে হইচই করেন।

এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানের নাম সংসদে উচ্চারণ করায় ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি এর প্রতিবাদ করেন। এ কারণেই তিনি ওয়াকআউট করেন।

এর আগে বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে প্রথমে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম বলে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করেন এমপি হারুন। তখনই ডেপুটি স্পিকার তার কাছে জানতে চান কেন তিনি ইন্নালিল্লাহ বলে বক্তব্য শুরু করলেন।

জবাবে এমপি হারুন বলেন, সেটা তিনি পরে বলবেন। ডেপুটি স্পিকার বলেন, অবশ্যই শেষে আপনি এর ব্যাখ্যা দেবেন। কারণ সংসদের এই দীর্ঘ সময়ে এর আগে কখনো এমনটা শুনিনি।

পরে হারুনর রশিদের নির্ধারিত ১২ মিনিটের বক্তব্যে বাজেটের নানা সমালোচনা করেন। বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগে সংসদ সদস্য পাপলুর কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে দাবি করেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের সমালোচনা করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

একপর্যায়ের তার সময় শেষ হলেও তিনি না বসে বক্তব্য অব্যাহত রাখেন এবং সময় বাড়িয়ে দেয়ার জন্য ডেপুটি স্পিকারের কাছে আবেদন করেন। যদিও সংসদের সভাপতিত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার সময় বাড়িয়ে দেননি। এর প্রতিবাদ করে হারুনর রশিদ সংসদ কক্ষ ত্যাগ করতে উদ্যত হলে ডেপুটি স্পিকার তাকে অনুরোধ করে বসতে বলেন এবং তার কথা শুনতে অনুরোধ করেন।

এ পর্যায়ে হারুন তার চেয়ারে বসলে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, আপনি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন এটি সুন্দর প্রস্তাব। কিন্তু আপনি এমন দু’জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন যাদের কথা আমি সংসদের এই চেয়ারে বসে উচ্চারণ করতে চাই না। একটি নির্বাচিত সরকার কোনো কনভিক্টেড (দণ্ডিত) ব্যক্তির সঙ্গে ঐক্য করতে পারে না।

এসময় ডেপুটি স্পিকার বিএনপির এই এমপি কিছু অসংসদীয় কথা তার বক্তব্যে বলেছেন উল্লেখ করে সংসদে প্রতিদিন থেকে তা বাদ দেয়ার ঘোষণা দেন।

স্পিকারের বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনার পরামর্শে বিএনপির এমপি হারুনকে বাজেটের ওপর আর এক মিনিট বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। এ সময় হারুন ফ্লোর নিয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।

ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আপনি সময় বাড়িয়ে দেননি। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলার পর আপনি এক মিনিট সময় বাড়িয়েছেন। আমি আর বক্তব্য দেব না। আপনি আমার বক্তব্যে ইন্টারাপ্ট করেছেন। এর প্রতিবাদে আমি সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছি। এর সঙ্গে সঙ্গেই হারুন কক্ষ ত্যাগ করেন।

বিএনপির সংসদ সদস্য ওয়াকআউট করে চলে যাওয়ার পরপরই ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া হাউসকে উদ্দেশ করে বলেন, উনার (হারুনের) প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য আমি একাই যথেষ্ট। সংসদে কোনো সদস্য অসংসদীয় বক্তব্য দিলে আমি অবশ্যই তা ইন্টারাপ্ট করব। এটা সরকারি দলের কেউ দিলেও করবো বিরোধী দলের কেউ দিলেও করবো।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :