২০ মাস ধরে বাবরের খোঁজ নেয়নি পরিবার

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২০, ১০:১৯| আপডেট : ২৮ জুন ২০২০, ১২:৩১
অ- অ+

এক যুগের বেশি সময় ধরে কারাগারে বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে নিঃসঙ্গ জীবন কাটছে এক সময়ের প্রভাবশালী এই নেতার। ২০১৮ সালের নভেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত তার পরিবাবের সদস্য বা আইনজীবীরা কেউ কারাগারে দেখতে যাননি তাকে।

জানা গেছে, গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে বেশ কয়েকটি জেলা কারাগারে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছিল। বর্তমানে তার ঠাঁই কেরাণীগঞ্জ কারাগারে।

নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কারাগারে থেকেই শোনেন তোলপাড় করা দুই মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডের রায়। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলেও তাতে কোনো গতি নেই।

নানা রোগে আক্রান্ত বাবর ১৩ বছর ধরে কারাগারে। এই সময়ে আরও বেশি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে গেছেন। দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর আগে ঢাকার সিএমএম কোর্টে এক মামলায় হাজিরা দিতে এসেছিলেন বাবর। আদালতে ঢোকা এবং বের হওয়ার সময় উপস্থিত তার আইনজীবী ও কর্মীদের চোখ বিষয়টি ধরা পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাবরের পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতেও কষ্ট হচ্ছে তার। সিএমএম কোর্টে তাকে দেখে মনে হলো শারীরিকভাবে মোটেও ভালো নেই।’

কারাগারের সূত্র বলছে, দুটি আলোচিত মামলায় ফাঁসির রায় মাথায় নিয়ে কারাগারে বাবর স্বাভাবিকই আছেন। কনডেম সেলে থাকছেন বলে আগের মতো তেমন দাপট নেই।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘লুৎফুজ্জামান বাবর ভালো আছেন। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য আসামির মতো তিনিও কনডেম সেলে আছেন।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত এপ্রিলে সারা দেশের ৬৮ কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। গত ঈদের সময়ও এটি বন্ধ ছিল। তবে নতুন নিয়মে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ আছে। সেখানে বন্দিরা কথা বলতে পারছেন পরিবারের সঙ্গে।

বিএনপির সরকারের সময়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের সাত বছর পর ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। এর চার বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বাবরসহ ১৯ জনের ফাঁসির রায় দেয় আদালত।

রায়ের দিনে আদালত চত্বরে উচ্চস্বরে এসবের সঙ্গে তার কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেন বাবর।

বাবরের মামলাসহ সার্বিক বিষয় পরিবারের পক্ষ থেকে দেখভাল করেন শামসুল হক বকুল। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত নির্বাচনে নেত্রকোনায় বাবরের আসন থেকে তার স্ত্রী তাহমিনা জামান ধানের শীষের প্রার্থী হয়েছিলেন। সে কারণে নির্বাচনের আগে কারাগারে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত কেউ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাননি।

সাক্ষাৎ করতে পরিবারের কেউ যাননি, নাকি সাক্ষাতের সুযোগ পায়নি, তা পরিষ্কার করেননি শামসুল হক।

জানা গেছে, বাবরের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গুলশানের বাসায় থাকেন। তার বড় ছেলে আগে দেশের বাইরে থাকলেও এখন দেশে আছেন। তিনিই পরিবারের দেখভাল করেন।

আপিলের বিষয়ে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘২১ আগস্টের মামলায় হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে। কিন্তু এখনো একবারও শুনানি হয়নি। তারপরও উচ্চ আদালতে কী হয় সে অপেক্ষায় থাকা ছাড়া তো উপায় নেই।‘

এদিকে দীর্ঘদিন খোঁজখবর বা আলাপ-আলোচনায় না থাকলেও সম্প্রতি বাবরের মুক্তি চেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি চলমান করোনা দুর্যোগের সময় বাবরসহ অন্য নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।

দলীয় একটি সূত্র বলছে, যে দুই মামলায় বাবরের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে, তা থেকে তার মুক্তির আশা তারা একরকম ছেড়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া শারীরিকভাবে এবং বয়সের কারণে বেশ কাবু হয়ে পড়েছেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুন/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আলোচিত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের চাকরি ফেরত দেয়ার নির্দেশ
বগুড়ায় শ্বশুর ও পুত্রবধূকে হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা  
পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের রহস্যজনক মৃত্যু
জুরাইনে অস্ত্রসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা