প্রদীপ-লিয়াকতের ডিভিশন পেতে প্রত্যয়নপত্র দেন এসপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২০, ০০:২৩| আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২০, ০০:২৪
অ- অ+
ফাইল ছবি

আদালতে আত্মসমর্পণের পর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ হত্যা মামলার আসামি ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং প্রধান আসামি এসআই লিয়াকত আলীকে জেলহাজতে ডিভিশন দেয়ার প্রত্যয়নপত্র দিয়েছিলেন কক্সবাজারের এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন। সেখানে তিনি ওসি ও এসআইকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা উল্লেখ করে ডিভিশন দিতে অনুরোধ জানান। তবে কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন আবেদন দুটি বাতিল করে দেন।

৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় এপিবিএনের চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান। এরপর দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে ঘটনাটি। নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কক্সবাজার আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলা টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার সাহা, বাহারছড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ নয়জনকে আসামি করা হয়। এরপর সাত অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করে। পরে তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়। মামলাটিতে মোট আসামির সংখ্যা ১৩ জন।

সিনহা হত্যার পর পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাব। এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও তিন এপিবিএন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্সটি। বর্তমানে ওসি প্রদীপসহ সবাইকে র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

এদিকে জেলকোডের ৬১৭ বিধিতে বলা আছে, যারা ভালো চরিত্রের অধিকারী ও অনভ্যাসগত অপরাধী; সামাজিক মর্যাদা, শিক্ষা এবং অভ্যাসের কারণে যাদের জীবনযাপনের ধরন উচ্চমানের এবং যারা নৃশংসতা, নৈতিক স্খলন এবং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসামূলক অপরাধ বা বিস্ফোরক আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখা, সম্পত্তিসংক্রান্ত মারাত্মক অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত নন বা অন্য কাউকে এসব অপরাধ করতে প্ররোচিত বা উত্তেজিত করেনি তারা ডিভিশন-১ প্রাপ্তির যোগ্য হবেন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার গত ৮ আগস্ট স্বাক্ষরিত তার প্রত্যয়নপত্রে ওসি প্রদীপকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে ডিভিশন দেয়ার আবেদন দেন। সেখানে তিনি লেখেন, এই মর্মে প্রত্যায়ন করা যাচ্ছে যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ শাখা-২ এর স্মারক নং-স্ব: ম:/পু-২/উন্নীতিকরণ-১/২০০৮/৬২৫, তাং ৩০/০৭/২০১২ খ্রি. মূলে জারিকৃত প্রজ্ঞাপণ অনুযায়ী পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) জনাব প্রদীপ কুমার দাশ একজন ১ম শ্রেণির স্থায়ী (নন-ক্যাডার) কর্মকর্তা। একইভাবে তিনি ওসি লিয়াকত হোসেনকে প্রত্যায়নপত্র দেন।

জেলকোডের বিধি ৬১৭ (২)-এ বলা হয়েছে, ‘নাগরিকত্ব নির্বিশেষে সামাজিক মর্যাদা, শিক্ষা এবং অভ্যাসের কারণে জীবনযাপনের ধরন উচ্চমানের বন্দিরা ডিভিশন-২ প্রাপ্তির যোগ্য হবেন। অভ্যাসগত বন্দিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই শ্রেণির বহির্ভূত হবে না, সরকারের অনুমোদন বা পুনর্বিবেচনার শর্তে শ্রেণি বিভাজনকারী কর্তৃপক্ষকে বন্দির চরিত্র এবং প্রাক পরিচিতির ভিত্তিতে এ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য ক্ষমতা দেওয়া হবে। যেসব বন্দি ডিভিশন ১ ও ২-এর অন্তর্ভুক্ত নয় তারা তৃতীয়টির অন্তর্ভুক্ত হবেন, যেখানে বলা হচ্ছে, আদালত কোনো বন্দিকে ডিভিশন ১ ও ডিভিশন ২ প্রদানের জন্য প্রাথমিক সুপারিশটি সরকারের অনুমোদন কিংবা পুনর্বিবেচনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন এবং মন্ত্রণালয় সেটি অনুমোদন বা পুনর্বিবেচনা করবেন।

জেল সূত্রে জানা গেছে, সিনহা হত্যার ঘটনায় ওসি প্রদীপসহ প্রধান তিন আসামিকে আলাদা সেলে রাখা হয়েছিল। সেখানে অন্য কাউকে রাখা হয়নি। বিশেষ আসামি হওয়ায় তাদেরকে আলাদা রাখা হয়। ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতের জন্য পুলিশ সুপার ডিভিশনের আবেদন করলেও কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন আবেদনটি বাতিল করে দেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/এসএস/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নির্বাচনের রোডম্যাপ এল, এবার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন হোক: নাহিদ ইসলাম
জাতি আশ্বস্ত, জামায়াত সন্তুষ্ট: ডা.শফিকুর রহমান
জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে হলে মেনে নেওয়া যেত: সালাহউদ্দিন
মিরপুর কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা