করোনার প্রভাবে শুঁটকি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

এস কে রঞ্জন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
| আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৪:৪৪ | প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৪:৪০

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে মুখ থুবড়ে পরেছে শুঁটকি ব্যবসা। প্রতি বছর শুঁটকি ব্যববসায়ীরা লাভে থাকলেও এবারের শুরুটা হয়েছে ব্যবসায়িক ক্ষতি ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে। গত তিন মাস ধরে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার লোকসান দিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি সরকারি প্রণোদনা তথা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে বিক্রি হচ্ছে না শুঁটকি মাছ। ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার শুঁটকি মাছ নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়েছে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা। রপ্তানি করার জন্য বিগত বছরগুলোর মতো প্রস্তুতি নিলেও মৌসুমের শুরুতেই করোনাভাইরাসের কারণে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।

পাঁচ মাস ধরে লকডাউন থাকার কারণে কোথাও মাছ রপ্তানি করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। একদিকে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের দুশ্চিন্তা, অন্যদিকে নতুন করে মহাজনের কাছ থেকে দাদনের ফাঁদে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা। তারা আর্থিক প্রণোদনা না পেলে তাদের বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন শুঁটকি ব্যবসায়ীসহ আড়ৎদাররা।

হতাশার মাঝেও শুঁটকি পল্লীতে ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় কারিগরসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা কর্মজীবীরা। মাচন (মাচা) তৈরি করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রাকৃতিকভাবে তৈরি করা হয় এখানকার শুঁটকি পল্লীতে। গুণগত মান বজায় থাকার কারণে কুয়াকাটার শুঁটকির চাহিদা ব্যাপক। দেশের বিভিন্ন স্থানসহ ভারত, চায়না শুঁটকি রপ্তানি করা হয়ে থাকে। এই পল্লীতে প্রায় পাঁচ হাজার লোকের কর্মব্যস্ততা শুরু হয় অক্টোবর মাসে। এই ব্যস্ততা শেষ হয় মার্চ মাসে।

স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন জানান, শুঁটকি ব্যবসায় প্রচুর মূলধন লাগে। মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই প্রায় সব ব্যবসায়ী নিজেদের মূলধনের পাশাপাশি ধার করে লাখ লাখ টাকা এনে মাছ কিনে শুঁটকি করে এ ব্যবসা চালু করেন। এখান থেকে কিছু মাছ স্থানীয় শুঁটকি মার্কেটে বিক্রি হয়। বেশির ভাগ মাছ রপ্তানি হয় বিভিন্ন দেশে। এবার করোনাভাইরাসের কারণে বেশিরভাগ শুঁটকি বিক্রি না হওয়ায় আমার সাত-আট লাখ টাকা ক্ষতি হবে।

শুঁটকি মার্কেটের ব্যবসায়ী সোহেল মাহমুদ জানান, আমাদের এই মার্কেটে প্রতিটা দোকানে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মাছ পড়ে আছে, বিক্রি নেই। যে পরিমাণে লোকসান হচ্ছে তাতে কিভাবে ক্ষতি পোষাবো তা আমরা জানি না।

কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জহিরুন্নবী জানান, কুয়াকাটা থেকেই প্রতি বছর ১৫০-২০০ কোটি টাকার মতো শুঁটকি দেশে ও দেশের বাইরে বিক্রি হয়। নিরাপদ ও মান সম্পন্ন শুঁটকি উৎপাদনের জন্য কুয়াকাটার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সরকারি প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় শুঁটকি ব্যবসায়ীরা আসতে পারেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯নভেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :